ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ১৮৮ জন ইতোমধ্যে দেশে ফিরেছেন। তবে এখনো আবুধাবির কারাগারে আটক রয়েছেন ২৫ জন বাংলাদেশি। তাদের মুক্তির লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক ও আইনি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সরকার আশা প্রকাশ করেছে, সহসাই এই বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) এ তথ্য জানায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে গত ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ দূতাবাস, আবুধাবী, তাদের মুক্তির জন্য কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি তালিকা প্রেরণ করে তাদের মুক্তির ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়। মুক্তি প্রক্রিয়ায় সন্তোষজনক গতি আনার লক্ষ্যে মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন।
ইতোপূর্বে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে ছাড় পাওয়া ১৮৮ ব্যক্তির ন্যায় বর্তমানে আটককৃতদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এর পরেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দৃশ্যমান না হওয়ায় গত ১ জুলাই দূতাবাস হতে আরেকটি নোট ভারবালের মাধ্যমে বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কনস্যুলার অ্যাকসেস চাওয়া হয়। গত ৮ জুলাই তাদের মুক্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে হামদান আল কাবি নামক এক ‘ল’ ফার্মকে নিযুক্ত করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নিযুক্ত ‘ল’ ফার্ম গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে জানায় যে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে স্টেট সিকিউরিটি সম্পর্কিত মামলা থাকায় আইনি পদক্ষেপসমূহ সময়সাপেক্ষ এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করে সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে মর্মে উক্ত ল’ফার্ম দূতাবাসকে সময়ে সময়ে অবহিত করছে।
গত ৭ আগস্ট আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে আবুধাবীস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের বৈঠককালে ২৫ জন বন্দির তালিকাসহ ইতোপূর্বে সকল যোগাযোগের তথ্য সম্বলিত হার্ড কপি হস্তান্তর করা হয়। দূতাবাস হতে গৃহীত কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ ও দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে বন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সে দেশের মিনিস্টার অব জাস্টিস (আবদুল্লাহ বিন সুলতান বিন আওয়াদ আল নোয়ামির)- কাছে একটি অনুরোধপত্র পাঠান। এরই ধারাবাহিকতাতায় গত ২২ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে উক্ত ২৫ জনের পাসপোর্ট কপি ও ভিসা নম্বর দূতাবাসের কাছে চাওয়া হয়। দূতাবাস অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকল তথ্য নোট ভারবাল আকারে পাঠান।