যেসব প্রবাসীর জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা ট্যাক্স ছাড়া মোট তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি/ছিনতাই করা ফোন এবং রিফারবিশড মোবাইল আমদানি বন্ধ করা হবে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের অফিস কক্ষে বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানোর বিষয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়য়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির মধ্যকার সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্তসমূহ-
১. প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময়ে ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
২. প্রবাসীদের যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা ফ্রিতে মোট তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন। অর্থাৎ নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন ফ্রিতে।চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হবে।
যাদের বিএমইটি কার্ড নেই তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজটি নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। কেননা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে সোনা, দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত আছে। চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই ক্রয় কৃত মোবাইলের কাগজ সঙ্গে রাখতে হবে।
৩. স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হবে। এতে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে। বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে।
৪. আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনকৃত মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, অন্যথায় কম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমদানি এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি এবং এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। আলোচনার ফলাফল দেশের ডিভাইস ইন্ডাস্ট্রির অনুকূল আসবে বলে মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে।
৫. আপনার অজান্তেই কেউ আপনার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কিনা সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যে-কোনো সাইবার অপরাধ, অনলাইন স্ক্যামিং, অনলাইন ও মোবাইল জুয়া, মোবাইল ব্যাংকিং জনিত অপরাধে আপনার নামে নিবন্ধিত সিমটি ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা- সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অপরাধ এবং রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সবসময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করুন। বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি/ছিনতাই করা ফোন এবং রিফারবিশড মোবাইল আমদানি বন্ধ করা হবে।
৬. ১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা স্টক ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই নাম্বার আছে, সেই আইএমইআই লিস্ট বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ নিয়ে এনবিআর-এর সাথে আলোচনা চলছে। তবে ক্লোন ফোন এবং রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না।
৭. বর্তমানে ব্যবহৃত সচল মোবাইল ফোন কোনোভাবেই ১৬ ডিসেম্বরের আগে বন্ধ হবে না। এ সংক্রান্ত গুজব থেকে সচেতন থাকুন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর, সুতরাং বৈধ আইএমইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট ক্রয় থেকে বিরত থাকুন। অবৈধ আমদানিকৃত, চোরাচালানকৃত এবং ক্লোন ফোন বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে।