খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিদেশ নিতে দেরি হচ্ছে: ডা. জাহিদ

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে বিদেশ নিতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে মেডিকেল বোর্ড। এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স প্রস্তুত আছে, তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায়, বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

তিনি বলেন, গত ৬ বছর ধরে মেডিকেল বোর্ড প্রতিকূল পরিবেশেও খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিয়ে আসছে এবং এখনো পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডা. জাহিদ জানান, চিকিৎসা সমন্বয়ের কাজে জুবাইদা রহমান সকাল-বিকেল বোর্ডের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। পরিবারের সদস্য শামিলা রহমান, শামীম ইস্কান্দারসহ অন্যরাও নিয়মিতভাবে অবহিত হচ্ছেন। খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা থাকলে গুজব না ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও আরও প্রতিকূল অবস্থা থেকে তিনি সেরে উঠেছেন। সবাইকে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশ নেওয়ার জন্য শারীরিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার অপেক্ষা করা হচ্ছে, তাই বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো উচিত নয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সবুজ সংকেত দিলেই কাতারের রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী। শনিবার গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তিনিই কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক এই বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে কাতারের রয়েল অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে আসবে। সেভাবে তারা এখন প্রস্তুত রয়েছে। এখন মেডিকেল বোর্ড যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে, তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসবে এবং ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাবে। সবকিছুই কাতার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করেছে।

অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জার্মানি থেকে অ্যাম্বুলেন্স আসছে এটা ঠিক আছে। আমরা নই, কাতার কর্তৃপক্ষই জার্মানি থেকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। অর্থাৎ বিএনপি চেয়ারপারসন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য রয়েল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সবকিছু হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা কাজ করছে।

এদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যান তার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরের পর শাশুড়ি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান তিনি।

এর আগে, লন্ডন থেকে শুক্রবার ঢাকায় পৌঁছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। বিমানবন্দর থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেখানে কয়েক ঘণ্টা থেকে দুপুরে ধানমন্ডিতে বাবার বাড়িতে যান। পরে রাতে আবার হাসপাতালে যান। এ সময় তার আগমনকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই মেডিকেল বোর্ডে তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানও সদস্য। গতকাল তিনি লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছেন তার শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যেতে।