জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। দিনটি পালনে জাতীয় পার্টি নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ৯টায় রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে জাপা এবং এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এদিন বিকেল ৩টায় রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
এদিকে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এরশাদ পত্নী রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে পৃথকভাবে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে রওশনের নেতৃত্বাধীন অংশ। এতে সভাপতিতত্ব করবেন এই অংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।
এ ছাড়া দলটির গুলশানের কার্যালয়ে দিনব্যাপী কুরআনখানির আয়োজন করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রওশনের অংশের মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কুচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ।
১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হয়।
১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদকে সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এই পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।
১৯৯১ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গ্রেফতার হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় পাঁচটি করে আসনে জয়ী হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয়ী হয়। এরপর দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই অসুস্থ হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।