জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমি বলতে চাই আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে? আমি বলব আরেকটা লড়াই হবে ইনশাআল্লাহ। একটা লড়াই হবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আর সেই লড়াইয়ে ইনশাআল্লাহ আমরা বিজয়ী হবো।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি করব না। চাঁদা নিতে দেব না, দুর্নীতি সহ্য করব না। জামায়াতে ইসলামী যদি আল্লাহর ইচ্ছায় দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পায়, তাহলে মালিক হব না, সেবক হব ইনশাআল্লাহ।’
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তরুণ-যুবকদের শক্তিকে একত্রিত করে বিজয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়বে, তার প্রমাণ কী? আমরা সবাইকে নিয়ে সেই সমাজ গড়ব। মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।’
দুপুর ২টায় সাত দফা দাবির সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ নেতা-কর্মী অংশ নেন। জামায়াত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অন্য রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য প্রদান করেন। ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে সমাবেশের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আবু সাঈদরা দাঁড়াত না, ‘তাহলে ২৪ জন শহীদের আত্মত্যাগে যুদ্ধটা সম্ভব হত না। যারা আজ বিভিন্ন দাবিদাওয়া করছে, তাদের অধিকাংশ দাবি কোথায় থাকত? তাই আমাদের প্রিয় শহীদদের অবমূল্যায়ন বা অপমান করা চলবে না। কোনো রাজনৈতিক দলকে হেনস্তা করা যাবে না। যারা তা করে, তাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, জামায়াত ইসলামী যদি আল্লাহর মেহেরবানিতে ও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সরকার গঠন করে তাহলে কোনো মন্ত্রী ও এমপি সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না। কোনো মন্ত্রী ও এমপি ট্যাক্সবিহীন গাড়ি ব্যবহার করবে না। কোনো মন্ত্রী ও এমপি নিজের হাতে টাকা চালাচালি করবে না। যদি কোনো এমপি বা মন্ত্রী নির্দিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষের কাছে প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য থাকবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চাঁদা আমরা নেব না।দুর্নীতি করব না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতিও সহ্য করব না।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের সমাবেশের জন্য তিনজন কর্মী ভাই ইন্তেকাল করেছেন। তাদের জন্য আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন আল্লাহ তাদের জান্নাত দান করেন এবং পরিবারকে ধৈর্য সহকারে সহায়তা করার তাওফিক দেন।’
সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বিকাল ৫টার পর দুই দফায় অসুস্থ হয়ে পড়েন জামায়াত আমির। অসুস্থতার মধ্যেও তিনি বক্তব্য শেষ করেন।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমার হায়াত যতক্ষণ রেখেছেন, তার এক মিনিটও বেশি বাঁচতে পারব না। তাই কেউ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না।’