একীভূত হচ্ছে এনসিপি ও গণঅধিকার, নেতৃত্ব নিয়ে এখনও হয়নি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হয়ে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে পথচলার আলোচনায় রয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্র ধরে গড়ে ওঠা তরুণ নেতৃত্বের এ দুই দল একীভূত হলে আরও কয়েকটি দল এতে যুক্ত হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আলোচনা ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে। যদি কিন্তু ছাড়াই ঐক্যবদ্ধভাবে পথচলার নবযাত্রা শুরু হলে এই দেশের রাজনীতিতে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

দুই দলের মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযাত্রার ইতিহাস রয়েছে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন, ২০২১ সালের মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনসহ নানা সময়ে রাজপথে একসঙ্গে কাজ করেছেন এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।

রাশেদ খান বলেন, এই দেশের জনগণেরও একটা প্রত্যাশা আছে, তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুক। সেই জায়গা থেকে আমরা আলোচনা ইতিবাচকভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। একীভূত হওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত উভয় দলের নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি বিরাজ করছে।

তবে, একীভূত দলের নাম ও নেতৃত্ব নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এনসিপি এক্ষেত্রে নিজস্ব নাম ধরে রাখতে আগ্রহী। এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, একীভূত দলটি নতুন কোনো নামে নয়, এনসিপি নামেই রাজনীতি করবে। গণ অধিকার পরিষদকে এনসিপির অধীনে আনা হবে এবং দলের প্রধান হিসেবে থাকবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে দেয়া হবে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদ।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজনৈতিক লিঁয়াজো প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে এনসিপির গঠন প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক আদর্শগত মিল রয়েছে। দুটি দলই তারুণ্যশক্তিনির্ভর। একীভূত করার বিষয়ে আমাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে।

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, একটা কথা স্পষ্ট, এনসিপির নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। এক বা একাধিক দল এনসিপির সঙ্গে একীভূত হওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। ইনশাআল্লাহ, তরুণদের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।

এদিকে, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলেই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক আলোচনা। নেতারা আশা করছেন, আলোচনার ইতিবাচক ধারাবাহিকতায় খুব শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।

নেতৃবৃন্দ একীভূত প্রক্রিয়া সফল করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বা নেতিবাচক মন্তব্য না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, এই ঐক্য শুধু দুটি দলের নয়, এটি তরুণদের সামগ্রিক রাজনৈতিক জাগরণের প্রতিফলন।