জানুয়ারি মাসেই নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান গণঅধিকার পরিষদের

জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে চক্রান্ত ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ তুলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সম্মেলনে, জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান করছে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন তিনি।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এর বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে আইনগত ভিত্তি প্রদান করতে হবে। নির্বাচনের বিলম্বই বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বাড়িয়ে তুলছে। নির্বাচনের নামে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি অপরিহার্য। এজন্য ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসন পরিবর্তন না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার দাবি জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ ডামি, স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো দলের ব্যানারে প্রার্থী হতে পারবে না। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকেও নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।’

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি সমর্থন করে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘শিক্ষকদের দাবিগুলো দ্রুত মেনে না নিলে আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করব। শিক্ষকদের কষ্ট দিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকতে পারবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুনও। তিনি বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরসহ এসব অগ্নিকাণ্ড সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হতে পারে। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সরকারকে সমর্থন জানিয়েছি, কিন্তু প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা ও সার্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের মতো জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যেন আর না ঘটে, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। আর কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না। তাই আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আজহার ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রিদওয়ান উল্লাহ খান প্রমুখ।