শাপলা প্রতীক ইস্যুতে এনসিপির ২ যুক্তি ও ৫ দাবি

আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

নির্বাচনে দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ বরাদ্দের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দুটি আইনি যুক্তি ও পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি ও যুক্তি তুলে ধরে দলটি অভিযোগ করে, নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দে ‘স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনি’ আচরণ করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনসিপির পাঠানো দরখাস্তগুলো নিষ্পত্তির আগেই ইসি ‘বিধি-বহির্ভূতভাবে’ হুমকি দিয়েছে যে দলটির পছন্দের প্রতীকের বাইরে গিয়ে কমিশন নিজস্বভাবে প্রতীক বরাদ্দ করবে। এনসিপি এ আচরণকে ‘স্বেচ্ছাচারী, অনাকাঙ্ক্ষিত ও বেআইনি’ বলে উল্লেখ করেছে।

এনসিপির উত্থাপিত দুটি যুক্তি

১. প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার নীতিমালা প্রকাশের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা-

দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত প্রতীক অন্তর্ভুক্তি বা বাদ দেওয়ার কোনো লিখিত নীতিমালা বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেনি। সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সমতা ও ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করা ইসির সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাই ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীকটি বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে।

২. রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৭(২) ও ফরম-২ অনুসরণের বাধ্যবাধকতা-

দলটি বলেছে, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে যেতে হলে ইসিকে ফরম-২ অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। এ ফরমে দলের প্রার্থিত প্রতীকের নাম উল্লেখ করাই আইনি বাধ্যবাধকতা। কমিশন ইচ্ছেমতো প্রতীক বরাদ্দ করার এখতিয়ার রাখে না।

এনসিপির পাঁচ দফা দাবি

১. নির্বাচন কমিশন লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দেবে কোন নীতিমালার ভিত্তিতে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ বা ‘লাল শাপলা’ প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে।
২. যদি এমন কোনো মানদণ্ড না থাকে, তবে তা অবিলম্বে প্রণয়ন ও প্রকাশ করতে হবে এবং সব দলের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
৩. ২০০৮ সালের বিধিমালার ফরম-২ অনুসারে এনসিপির প্রার্থিত প্রতীকের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৪. প্রতীক বরাদ্দে যুক্তিসংগত, স্বচ্ছ ও ন্যায্য সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করতে হবে।
৫. প্রতীকের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত গ্রহণে বৈষম্য দূর করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

এনসিপি জানিয়েছে, জনগণের সঙ্গে ‘শাপলা প্রতীক’ ঘিরে দলটির যে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা উপেক্ষা করে অন্য কোনো প্রতীক গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ১৩ অক্টোবর ইসির ‘হুমকিমূলক চিঠির’ পরিপ্রেক্ষিতে তালিকা থেকে বিকল্প প্রতীক বেছে নেওয়ার সুযোগও নেই বলে জানায় দলটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইসি এনসিপির সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করছে। এর ফলে কমিশনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং একটি নতুন সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’

দলটি অভিযোগ করে, ইসির এই আচরণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সদিচ্ছা ও সক্ষমতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

এনসিপি জানায়, তারা এর আগে ৩ আগস্ট, ২৪ সেপ্টেম্বর ও ৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রতীক বরাদ্দের জন্য দরখাস্ত করেছে। দলটির প্রত্যাশা ইসি ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধি ৯(১) অনুসারে এনসিপির পক্ষে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা অথবা ৩. লাল শাপলা এই তিনটির মধ্যে যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে।

DR/MMS