যুবদল নেতাকে হত্যা নির্বাচন বানচালের অংশ: নয়ন

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচালের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের উদ্যোগে ‘ধানের শীষের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে যুবদলের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি গোলাম কিবরিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে এ কথা বলেন।

নয়ন বলেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনাই শুরু হয়নি, তার আগেই অস্থিরতা তৈরি করার জন্য সংগঠিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, হত্যার ধরণ, সময় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি নিছক ব্যক্তিগত শত্রুতার নয়; বরং নির্বাচন বিলম্বিত করার বড়ো পরিকল্পনার অংশ। 

এই যুবদল নেতা বলেন, যেভাবে সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বোঝা যায় পুরো ঘটনা পরিকল্পিত ছিল। আমরা এখনো জানি না কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, কিন্তু একটা মহল পরিষ্কারভাবে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করতে ও পরিবেশ নষ্ট করতে চায়।

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান ৫ আগস্টের পর থেকেই স্বাভাবিক নির্বাচন-পরিবেশ ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়ে আসছেন, অথচ ১৬ মাস পার হলেও দেশে একটি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি। নয়ন বলেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে যখন আলোচনা শুরু হচ্ছে, তখনই অস্থিরতা তৈরির জন্য যুবদল নেতাকে টার্গেট করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পরও যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলে নয়ন বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। আমরা আজকের সভা থেকে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি এবং তাদেরকে কোনোভাবে ছাড় না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

যুবদল সেক্রেটারি নয়ন বলেন, একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবে এবং ফল কী হবে ষড়যন্ত্রকারীরা তা জানে। তাই নির্বাচনের সম্ভাব্য পরিবেশ নষ্ট করতেই এই হত্যাকাণ্ড।

তিনি দাবি করেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের সম্ভাবনা যত বাড়ছে, ততই বিভিন্ন মহলের নাশকতামূলক তৎপরতা বাড়ছে। গোলাম কিবরিয়ার হত্যাকে তিনি সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে দেখেন।

দীর্ঘ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে নয়ন বলেন, গত ১৬ বছরে সংসদ ছিল, আদালত ছিল, আইন ছিল কিন্তু কার্যকারিতা ছিল না। ভোটাধিকার ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার সব ভঙ্গ হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। ফ্যাসিবাদের পতন হলেও জনবান্ধব সরকার গঠনের লড়াই এখনো শেষ হয়নি।

সভায় অন্যান্য নেতারাও বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হওয়ার সময়েই অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা বাড়ছে, আর গোলাম কিবরিয়া হত্যা তারই সতর্ক সংকেত।