যেভাবে হয়েছিল মহানবী (সা.)-এর কাফন ও দাফন

হিজরি ১১ সালের রবিউল আউয়াল মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর আনসার ও মুহাজির সাহাবিরা সর্বসম্মতিতে হজরত আবু বকর (রা.)-কে খলিফা নির্বাচিত করেন। এরপর নবীজির কাফন ও দাফনের কাজ সম্পন্ন হয়।

নবীজির দেহ মোবারকের গোসল : সোমবার দ্বিপ্রহরে নবীজি (সা.) ইন্তেকাল করেন। পরদিন মঙ্গলবার তাঁকে কাপড়সহ গোসল দেওয়া হয়। এ কাজে অংশ নেন হজরত আলী (রা.), হজরত আব্বাস (রা.), তাঁর পুত্র ফজল ও কুসাম (রা.), হজরত উসামা বিন যায়েদ (রা.), শুকরান (রা.) এবং আওস খাওলি (রা.)। দেহ মোবারকে পানি ঢালেন উসামা ও শুকরান (রা.), ঘষে দেন হজরত আলী (রা.), আর দেহ মোবারক হেলান দিয়ে রাখেন আওস খাওলি (রা.)। (ইবনে মাজা: ৫২১)

কুবায় অবস্থিত গারস নামক কূপের পানি এনে বরইপাতা মিশ্রিত করে পানি গরম করার পর নবীজিকে গোসল দেওয়া হয়। গারস কূপের পানি রাসুল (সা.) নিজেও পান করতেন। আর রাহিকুল মাখতুম : পৃ. ৮৪০

রাসুল (সা.)-এর কাফন : গোসলের পর তিনটি সাদা ইয়ামানি সাহুলিয়া চাদর দিয়ে নবীজিকে কাফন পরানো হয়। কাফনের মধ্যে জামা কিংবা পাগড়ি কিছুই ছিল না। সহিহ বোখারি : ১৬৯

রাসুল (সা.)-এর দাফনস্থান নিয়ে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতবিরোধ হয়। কেউ মসজিদে নববিতে, কেউ জান্নাতুল বাকিতে দাফনের প্রস্তাব দেন। হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, নবীরা যেখানে ইন্তেকাল করেন, সেখানেই দাফন করা হয়। ফলে সিদ্ধান্ত হয়, হজরত আয়েশা (রা.)-এর ঘরে, যেখানে রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন, সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে। হজরত আবু তালহা (রা.) দেহ মোবারক সরিয়ে সেখানে কবর খনন করেন। (রাহিকুল মাখতুম: পৃ. ৮৪০)

রাসুল (সা.)-এর জানাজা পৃথকভাবে সাহাবায়ে কেরাম আদায় করেন; কোনো নির্দিষ্ট ইমাম ছিলেন না। প্রথমে বনু হাশিমের সদস্যরা, এরপর মুহাজির, আনসার, পরে সাধারণ পুরুষ, মহিলা ও শিশুরা জানাজা পড়েন।
(তাবাকাতে ইবনে সাদ, আর রাহিকুল মাখতুম: পৃ. ৮৪১)

জানাজা আদায় করতে করতে মঙ্গলবার পুরো দিন লেগে যায়। মঙ্গলবার দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বুধবার রাতের বেলা রাসুল (সা.)-এর দেহ মোবারক সমাহিত করা হয়।