ব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করি। সুষম ও স্বাস্থ্যকম খাবারের ক্ষেত্রে আমাদের আদর্শ হতে পারেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তার খাদ্যাভ্যাস ছিল পরিমিত, পুষ্টিকর ও ভারসাম্যপূর্ণ।
নবী করিম (সা.)-এর প্রিয় ১০টি খাবার —
১) খেজুর
খেজুরে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন বি-৬, লৌহ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামসহ নানা খনিজ। প্রতিদিন সাতটি ‘আজওয়া’ খেজুর খেলে বিষ ও যাদু থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়— হাদিসে খেজুরের এমন উপকারের কথা বর্ণিত হয়েছে। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৪৫)।
২) ডুমুর
কোরআনে ‘ডুমুর ও জলপাইয়ের শপথ’-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। (সুরা আত-তীন, আয়াত :১)।
ডুমুর ফল পাকস্থলির সমস্যা, বাত, গাউটের মতো রোগে উপকারী এবং হাড়কে মজবুত করে।
৩) দুধ
উট ও ছাগলের দুধ প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রিয় ছিল। দুধে আছে ক্যালসিয়াম, যা হাড়-দাঁত মজবুত করে, গ্যাস্ট্রিক কমায়, দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
৪) গোস্ত
হাদিসে গোস্তকে ‘খাবারের সর্দার’ বলা হয়েছে। এতে রয়েছে প্রোটিন, জিঙ্ক ও লৌহ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড়কে শক্তিশালী করে।
৫) আঙুর
আঙুর রক্ত পরিশুদ্ধ করে, কিডনি ও হজমের জন্য উপকারী। নবী (সা.) আঙুরও পছন্দ করতেন।
৬) মধু
নবী করিম (সা.) প্রতিদিন সকালে মধু মিশ্রিত পানি পান করতেন। আব্বাস (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন— ‘রোগমুক্তি আছে তিনটি জিনিসে। শিঙ্গা লাগানোতে (হিজামা), মধু পানে এবং আগুন দিয়ে দাগ দেয়াতে। আমার উম্মাতকে আগুন দিয়ে দাগ দিতে নিষেধ করছি।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৮১)।
৭) জলপাই ও জলপাই তেল
কোরআনে আল্লাহ তায়ালা জলপাইয়ের কসম করেছেন। নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা জলপাইয়ের তেল খাও এবং শরীরে মাখো, কারণ এটি বরকতময় গাছ থেকে এসেছে।’(তিরমিজি, হাদিস :১৮৫২)।
৮) যব
জ্বর ও দুর্বলতায় যব উপকারী। নবী (সা.) যবের রুটি, খিচুড়ি ও পায়েস খেতেন।
হাদিসে এসেছে, অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠা আলী (রা.)-কে নবী (সা.) যবের খাবার খেতে বলেছিলেন, কারণ এটি শরীরের জন্য উপকারী। (ইবন মাজাহ, হাদিস :৩৪৪২)।
৯) তরমুজ
পানি সমৃদ্ধ ও ক্যালরি কম হওয়ায় তরমুজ কিডনি, পাকস্থলি ও হৃদরোগের জন্য উপকারী।
নবী (সা.) তরমুজ খেজুরের সঙ্গে খেতেন এবং বলতেন—একটির তাপ অন্যটির শীতলতা দূর করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৬)।
১০) কুমড়া
এটি নবী (সা.)-এর অন্যতম প্রিয় সবজি। কুমড়ায় ফুসফুস, রক্তচাপ, হাঁপানি, হৃদরোগ ও জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধের উপকারী উপাদান রয়েছে।
আনাস (রা.) বলেন, এক ভোজে নবী (সা.) কুমড়ার টুকরো খুঁজে নিয়ে খাচ্ছিলেন, সেই থেকেই তারও কুমড়া পছন্দ হয়ে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৭৮২)।
সূত্র : অ্যাবাউট ইসলাম