আদর্শ রাষ্ট্রগঠনে মহানবী সা.

ইসলামি ইতিহাস ও হাদিসের আলোকে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার পরে (শাসকগোষ্ঠী দ্বারা অবৈধভাবে) প্রাধান্য দেওয়ার কাজ হবে এবং এমন অনেক কাজ হবে, যেগুলোকে তোমরা মন্দ জানবে।

সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তখন আমাদের কী আদেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেন, যে অধিকার আদায় করার দায়িত্ব তোমাদের আছে, তা তোমরা আদায় করবে এবং আপনাদের যে অধিকার তা তোমরা আল্লাহর কাছে চেয়ে নেবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬০৩)

গবেষকরা এই হাদিসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন, ইসলামে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও সামাজিক ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১. ইসলামের দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, কোনো নেককার ইমাম বা শাসকের অধীনে একতাবদ্ধ না হলে মুসলিমদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ নিশ্চিত হয় না। রাষ্ট্রীয় বিশৃঙ্খলা সমাজে অকল্যাণ ও অসাম্য ডেকে আনে।

২. যদি শাসক দ্বিনের ওপর অটল থাকেন, তাহলে তার প্রতি আনুগত্য করা মুসলমানদের জন্য আবশ্যক।

৩. হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, মুসলিম শাসক মানেই আদর্শ বা অনুসরণীয় নয়। বরং শাসকদের বিচ্যুতির সম্ভাবনা বেশি, যা জনগণকে সতর্ক থাকতে শিখায়।

৪. শাসকগোষ্ঠী পাপাচারে লিপ্ত থাকলেও মুসলিমরা এমন কোনো কাজ করবেন না, যা রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলে। বরং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বজায় রেখে শাসককে সংশোধনের চেষ্টা করা মুসলিমদের দায়িত্ব।

৫. এছাড়া শাসকগোষ্ঠীর পরিবর্তনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা ও তাদের ন্যায়সঙ্গত হওয়ার জন্য আহ্বান জানানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাদিসটি রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করার নীতিমালা হিসেবে মুসলিম সমাজের জন্য যুগোপযোগী দিশা প্রদান করে। (সূত্র: মাউসুয়াতুল হাদিসিয়্যা)