চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা অপো আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রিমিয়াম সিরিজ অপো (Oppo Reno 15 Pro Max) রেনো ১৫ প্রো ম্যাক্স-এর সম্ভাব্য উন্মোচনের সময়, মূল্য এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এবার ফাঁস হয়েছে।
এই ফোনটি হবে অপো রেনো ১৪ প্রো-এর উত্তরসূরি অথবা রেনো সিরিজে নতুন সংযোজন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোম্পানি এবার ‘প্রো ম্যাক্স’ নাম ব্যবহার করে অ্যাপলের নামকরণ পদ্ধতি অনুসরণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উন্মোচনের সময় ও সম্ভাব্য মূল্য
বিশ্বস্ত প্রযুক্তি বিশ্লেষক যোগেশ ব্রার এবং স্মার্টপ্রিক্স-এর যৌথ প্রতিবেদনে জানা গেছে, অপো-র এই ফোন প্রথমে চীনে ২০২৫ সালের শেষের দিকে উন্মোচিত হতে পারে। পরে এটি ভারতে ২০২৬ সালের শুরুর দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ভারতে ফোনটির সম্ভাব্য মূল্য হতে পারে প্রায় ৫৫ হাজার রুপি। এর আগে অপো রেনো ১৪ প্রো ৫জি ভারতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাজারে আসে, যার দাম ছিল ১২ জিবি + ২৫৬ জিবি সংস্করণের জন্য ৪৯,৯৯৯ রুপি এবং ১২ জিবি + ৫১২ জিবি মডেলের জন্য ৫৪,৯৯৯ রুপি। নতুন প্রজন্মের রেনো ১৫ প্রো ম্যাক্স সেই দামের সামান্য উপরে অবস্থান করবে বলে মনে হচ্ছে।
ডিসপ্লে ও নকশা
রেনো ১৫ প্রো ম্যাক্স-এ থাকবে একটি ৬.৭৮ ইঞ্চি ১.৫কে এলটিপিও ওএলইডি পর্দা, যার রিফ্রেশ রেট ১ হার্জ থেকে ১২০ হার্জ পর্যন্ত পরিবর্তনযোগ্য। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীর কাজের ধরন অনুযায়ী পর্দার গতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করবে, যা ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে সাহায্য করবে। এই পর্দাটি হবে সমতল বা ফ্ল্যাট প্যানেল, যা দেবে প্রিমিয়াম এবং মসৃণ দৃশ্য অভিজ্ঞতা।
কার্যক্ষমতার ক্ষেত্রে ফোনটিতে ব্যবহার করা হবে মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৯৪০০ চিপসেট, যা ২০২৫ সালের অন্যতম শক্তিশালী প্রসেসর হিসেবে ধরা হচ্ছে। এর সঙ্গে থাকবে ৬,৫০০ এমএএইচ ক্ষমতার ব্যাটারি, যা দীর্ঘ সময়ের ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। ফোনটি চালিত হবে অ্যান্ড্রয়েড ১৬-ভিত্তিক কালারওএস ১৬-এ, যেখানে অপোর নিজস্ব কাস্টম ইন্টারফেস আরও উন্নত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা দেবে।
ক্যামেরা ব্যবস্থা
রেনো ১৫ প্রো ম্যাক্স-এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হবে এর ২০০ মেগাপিক্সেল স্যামসাং এইচপি৫ মূল সেন্সর। এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে একটি ৫০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ক্যামেরা এবং একটি আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স, যা দেবে পেশাদার মানের ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতা।
সেলফির জন্য থাকবে একটি ৫০ মেগাপিক্সেল সামনের ক্যামেরা, যা ভিডিও কল এবং ভ্লগিংয়ের জন্য দারুণ ফলাফল দেবে। এছাড়াও এতে থাকতে পারে অপো-র নিজস্ব লুমো ক্যামেরা প্রযুক্তি, যা ছবি প্রক্রিয়াকরণ ও আলো নিয়ন্ত্রণ আরও উন্নত করবে।
সংযোগ ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
এই ফোনে থাকবে আধুনিক সংযোগ সুবিধা যেমন ওয়াই-ফাই ৭, এনএফসি, এবং ব্লুটুথ। নিরাপত্তার জন্য এতে থাকবে পর্দার নিচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, যা নিরাপত্তা ও আভিজাত্য—দুই দিকেই উন্নত অভিজ্ঞতা দেবে।
অপো রেনো ১৫ প্রো ম্যাক্স নিয়ে প্রযুক্তি মহলে আগ্রহ ইতিমধ্যেই তুঙ্গে। এর ২০০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, শক্তিশালী ডাইমেনসিটি ৯৪০০ প্রসেসর এবং উন্নত কালারওএস ১৬ একে নিঃসন্দেহে ২০২৬ সালের অন্যতম আলোচিত ফ্ল্যাগশিপ ফোনে পরিণত করবে। যদি অপো তাদের প্রতিশ্রুত বৈশিষ্ট্যগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারে, তবে এটি ভারতের প্রিমিয়াম স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাং, ওয়ানপ্লাস এবং গুগল পিক্সেল-এর শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে।