ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলেই যেন থেমে যায় আধুনিক জীবনের গতি। প্রতিদিন চার্জ দিতে দিতে বিরক্ত অনেকেই। তবে কল্পনা করুন একবার চার্জ দিলে মোবাইল ফোন চলবে টানা ৮০ বছর। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমন ভবিষ্যতের কথাই জানাচ্ছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি সংস্থা রোসাটম।
রোসাটমের ফার্স্ট ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল কিরিল কোমারভ জানিয়েছেন, ‘নিউক্লিয়ার ব্যাটারি’ উদ্ভাবনের ফলে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের চিরাচরিত ধারা বদলে যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী এই উদ্ভাবন বৃথা যাবে না। একসময় এর বাস্তব প্রয়োগ আমরা দেখতে পাব। মানবজাতি এমন এক নিউক্লিয়ার ব্যাটারির স্বপ্ন দেখে যা ৮০ বছর ধরে মোবাইল ফোন চালাতে পারবে, একবারও চার্জ না দিয়েই। হয়তো কেউ এত বছর একই ফোন রাখতে চাইবে না, কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে এটা সম্ভব।’
এই নিউক্লিয়ার ব্যাটারি মূলত রেডিওঅ্যাকটিভ আইসোটোপ থেকে উৎপন্ন তাপ বা বিকিরণকে বিদ্যুতে রূপান্তর করবে। এতে ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার দরকার হবে না। থাকবে না বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঝুঁকিও। এই প্রযুক্তি শুধু মোবাইল ফোন নয় মহাকাশ অভিযান, আর্কটিক অঞ্চল, কিংবা দূরবর্তী সেন্সর পরিচালনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
রোসাটম বলছে, এটি নতুন কোনো প্রকল্প নয় বরং দীর্ঘদিনের পারমাণবিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতার ফল। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া থেকে তারা ইতোমধ্যেই তৈরি করেছে উচ্চ-শক্তির কার্বন ফাইবার, যা আজকের বিমান, জাহাজ ও মহাকাশযানে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কোমারভ বলেন, ‘নতুন মানেই সবসময় অজানা নয়। আমরা প্রমাণিত প্রযুক্তির নতুন ব্যবহার খুঁজে বের করি। গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে পারমাণবিক শক্তিই হতে পারে একমাত্র টেকসই সমাধান।’
কিরিল কোমারভ জানান, একটি ছোট ইউরেনিয়াম পেলেট ৪০০ কেজি কয়লার সমান শক্তি দেয় যা মহাকাশযান চালাতে অপরিহার্য। রাশিয়া ইতোমধ্যে চাঁদে পারমাণবিক শক্তিচালিত ইনস্টলেশন ও গভীর মহাকাশযানের জন্য প্রপালশন সিস্টেম তৈরির জাতীয় প্রকল্প হাতে নিয়েছে।