সবার আগে কিছু ম্যাচের ফল। ১৭১ রানে জয়। বৃষ্টি আইনে ১৪৬ রানে জয়ী। ৭ উইকেটে জয়। ৮ উইকেটে জয়। ৫২ রানে জয়ী। ১৪০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়। ৭ উইকেটের আরেকটি বড় জয়। ৮ উইকেটে জয়ী। ৮ উইকেটে আরেকটি জয়। ৫৮ রানে জয়। ১০ উইকেটে জয়ী।
এগুলো লিগ পযায়ের খেলার ফল। সুপার লিগের দুই ম্যাচেও দাপুটে জয়ের রেকর্ড। প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৭১ রানের জয়। এই জয়ী দলের নাম আবাহনী লিমিটেড। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) এই পারফরমেন্স দেখিয়েছে আবাহনী। লিগ পর্যায়ের খেলা শেষ হওয়ার পরই বোঝা যায় আবাহনী বাকিদের ছাড়িয়ে অনেক দুরে চলে যাচ্ছে। গেলও তাই। লিগের ১১ এবং সুপার লিগের দুই টানা ১৩ ম্যাচে জয়। তাও আবার সবগুলো ম্যাচেই বড় জয়। যাকে বলে একতরফা ভঙ্গিতে প্রতিপক্ষকে ভেঙ্গেচুরে এগিয়ে চলা- তেমন জয়ই পেল আবাহনী এই ১৩ ম্যাচে।
এবারের এই টুর্নামেন্টে আবাহনীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন কোনো পরিস্থিতিই যে তৈরি করতে পারেনি প্রতিপক্ষ কোনো দল। যখন যা চেয়েছে, যেভাবে ম্যাচ শেষ করতে চেয়েছে তাই করে দেখিয়েছে আবাহনী। আর তাতেই শিরোপা জয়ের পথ পরিস্কার তাদের। চ্যাম্পিয়নশিপের সেই উৎসব আজই করতে পারে আবাহনী। আজ সুপার লিগে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবাহনী মুখোমুখি হচ্ছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। বিকেএসপি এই ম্যাচ জিতলেই আজ আবাহনী চ্যাম্পিয়ন। সুপার লিগের বাকি ম্যাচগুলো তখন হারজিতের হিসেব আর কোনো কাজে লাগবে না। পয়েন্ট টেবিলে আবাহনী এতই উচ্চতায় যে তাদের আর কোনো দলই স্পর্শ করতে পারবে না।
ফর্ম: চলতি পারফরমেন্স এবং শক্তিমত্তা-সবকিছু বিবেচনায় আনলে আজ বিকেএসপির ম্যাচে আবাহনী হট ফেভারিট। সার্বিক পয়েন্ট তালিকায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব আবাহনীর চেয়ে ৮ পয়েন্ট পিছিয়ে। তাছাড়া সর্বশেষ মোকাবেলায় লিগ পর্যায়ে আবাহনীর কাছে পাত্তাই পায়নি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। চলতি টুর্নামেন্টে আবাহনী তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়টা পায় সেই ম্যাচেই, ১০ উইকেটে।
১৮ এপ্রিল মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব গুটিয়ে যায় মাত্র ৮৮ রানে। আবাহনী সেই ১০.২ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। আজ চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করার ম্যাচে তেমন ‘নরম’ প্রতিপক্ষকে পেয়ে নিশ্চিত আবাহনী খুশি।
গেল মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা এবার লিগ পর্যায়ের প্রথম ম্যাচ থেকেই ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে বাকি ১১ দলের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যটা বেশ স্পষ্ঠ করে দেয়। জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিয়ে আবাহনী দল গঠন করে। জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে সব ম্যাচের একাদশে এই তারকা ক্রিকেটারদের পায়নি আবাহনী। কিন্তু তারপরও তারা তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। টানা এতগুলো ম্যাচে কোনো সময় পা হড়কায়নি তাদের।
এবারের টুর্নামেন্টে আবাহনীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো দল গড়েছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। কিন্তু লিগ পর্যায়ে প্রাইম ব্যাংক ১১ ম্যাচের মধ্যে ৪টিতে হেরে সেই যে পিছিয়ে গেল, আর সামনে বাড়তে পারলো না। পঞ্চম অবস্থানে থেকে তারা লিগ পর্যায় শেষ করলো। আর সুপার লিগে এখন পর্যন্ত চরম ফ্লপ দল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। সুপার লিগের দুই ম্যাচের দুটোতেই হার!
পয়েন্ট টেবিলে আবাহনী ২৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মোহামেডান। মতিঝিলের এই ক্লাবের পয়েন্ট ২০। সুপার লিগের দুই ম্যাচে জিতলেও মোহামেডানের ক্ষতিটা হয়েছে লিগ ম্যাচে। লিগের ১১ ম্যাচের মধ্যে ৮ জয় এবং তিনটি হারই মোহামেডানকে পিছিয়ে দেয়।
আজ জিতলেই আবাহনীর পয়েন্ট হবে ২৮। সুপার লিগের আর কোনো দলের সেই পয়েন্ট অর্জনের সুযোগই নেই। এই হিসেব জানাচ্ছে আবাহনী আজ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন।