স্বপ্নযাত্রা কি অব্যাহত রাখতে পারবে আফগানিস্তান

২০০৪ সালে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ট্রফিতে অংশগ্রহণের মাঝ দিয়ে আফগানিস্তান প্রথম আনুষ্ঠানিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ১৫ দলের টুর্নামেন্ট ছিল সেটি। মাত্র ২০ বছর ব্যবধানে সেই আফগানিস্তান অসাধারণ এক কীর্তি গড়েছে। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতেযোগিতা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছেছে তারা।

মাত্র ২০ বছরে তারা যে সাফল্য অর্জন করেছে অনেক দেশের এই অর্জনে ৫০ বছর লাগতে পারে। দেশটিতে সবসময়ের জন্য মেধাবী ক্রিকেটারের জম্ম দিয়ে এসেছে। এবার তারা দক্ষতার সঙ্গে সখ্যতা গড়েছে। একই সঙ্গে নিজেদের উন্নতি অব্যাহত রেখেছে।

দলটির অধিনায়ক স্পিনার রশিদ খান বিশ্ব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অন্যতম সেরা বোলার। তাদের দ্বিতীয় সেরা বোলার নুর আহমদকে রশিদ খানে বাম হাতি ভার্সন বলা যায়। দলটির ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ পাওয়ার প্লেতে যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক। ফজলহক ফারুকী দিনে দিনে ভবিষ্যতের ট্রেন্ট বুল্ট হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে চলেছেন। আর নাভিন উল হকও রয়েছে ডোয়াইন ব্রাভোর হাতে। এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার আফগানিস্তানের বোলিং পরামর্শক ও টি-২০ কিংবদন্তী।

মোহাম্মদ নবী ২০০৪ সালে আফগানিস্তানের প্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচে খেলেছিলেন। বর্তমানে ৩৯ বছর বয়স তার। আফগানিস্তানের প্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচে যেমন তিনি ছিলেন দেশটির খেলা প্রথম সেমিফাইনালেও তিনি থাকছেন। ক্যারিয়ারে ৪৫টি জয় পেয়েছেন তিনি। আরও একটা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন।

মুজিব উর রহমান এক ম্যাচ খেলার পর থেকে দলের বাইরে তিনি। তা সত্ত্বেও ডোয়াইন ব্রাভোর হাতে যথেষ্ঠ বিকল্প রয়েছে। এবারের বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত আফগানিস্তানের বোলাররা সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছে। তাদের শিকার করা উইকেটের সংখ্যা ৫৭। অন্য কোনো দেশ তাদের থেকে বেশি উইকেট শিকার করতে পারেনি। উইকেট শিকারের ইকোনোমি তালিকায় তারা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। ওভার প্রতি রান খরচ হয়েছে ৬.৩৫, শীর্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওভার প্রতি তাদের খরচ ৬.১০।

ব্যাটিং লাইন নিয়ে একটু সমস্যা রয়েছে দলটিতে। বিশষে করে তাদের মিডর অর্ডার দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছে না। প্রথমে ব্যাটিং করে গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান চারবার পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েছে, সেখানে রান তাড়া করার সময় খুবই নাজুক অবস্থায় পড়েছে। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে তারা করেছিল ৮ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শূন্য রানে জুটি ভেঙ্গেছিল, আর ভারতের বিপক্ষে সংগ্রহ ছিল ১৩ রান।

এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন গুরবাজ। ২৮১ রান তার। তৃতীয় স্থানেও রয়েছে এক আফগান ব্যাটার। ইব্রাহিম জাদরান তিনি। ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছে আফগানিস্তান। ফজলহজ ফারুকী ১৬ উইকেট নিয়ে সবার উপরে তিন। ১৪ উইকেট নিয়ে রশিদ খান রয়েছে যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে।

আইসিসি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান এখনো পর্যন্ত ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি। এবার সেই অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দেওয়ার সময় আফগানদের। সে অপেক্ষায় আফগানবাসী।