জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য শেষ ইনিংসে ওয়েস্ট ই্ন্ডিজের সামনে ২৮৭ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। অতদুর যেতে পারেনি স্বাগতিকরা। গুটিয়ে যায় ১৮৭ রানে। ১০১ রানে এই ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র হলো ১-১ এ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শেষবার টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ সেই ২০০৯ সালে। এই দলে খেলা কেউই ছিলেন না তখন বাংলাদেশ জাতীয় দলে। ১৫ বছর আগের সেই জয়ের স্মৃতি ফের মনে করিয়ে দিল ২০২৪ এর এই জয়।
কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কেননা এই মাঠে শেষ ইনিংসে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। উইন্ডিজের জয়ের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। জিততে হলে এই মাঠে রান তাড়া করে জয়ের নতুন রের্কড গড়তে হতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সেই ইতিহাস গড়তে পারেনি স্বাগতিকরা। বরং বাংলাদেশ দারুণ দাপুটে ক্রিকেট উপহার দিয়ে সিরিজ ড্র করলো। ২০০৯ সালের সেই টেস্ট সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছিল ২-০ তে। এবার টেস্ট সিরিজ ড্র করলো পিছিয়ে থেকেও।
কিংস্টনে চতুর্থদিনের লাঞ্চে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৩ রানে ১ উইকেট হারিয়ে। লাঞ্চের পর কিছুটা রান পেলেও হারায় আরো তিন উইকেট। ৪ উইকেটে ১৩৩ রান নিয়ে খেলতে নেমে দিনের শেষ সেশনে স্বাগতিকরা বাংলাদেশের বোলিংয়ের কোনো জবাই খুঁজে পায়নি। বাকি ৬ উইকেট হারায় তারা আর মাত্র ৫৪ রান যোগ করে। থেমে যায় ১৮৭ রানে। এই ইনিংসে বল হাতে বাংলাদেশ দলের সেরা অস্ত্র ছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৫০ রানে তিনি পান ৫ উইকেট। শেষ ইনিংসে তার এই কৃতিত্বই তাকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার এনে দিলো।
প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে নাহিদ রানার ৫ উইকেট শিকারে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ থামে ২৬৮ রানে। এই ইনিংসে দলের হয়ে একাই লড়াই করেছেন জাকের আলি। তবে ৯ রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। ৫ ছক্কা ও ৮ চারে ৯১ রান করেন জাকের।
২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫৭ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তাইজুল ও তাসকিন আহমেদ। মিকাইল লুইস ৬ ও কাসি কার্টি ১৪ রান করে আউট হন। তবে কেভাম হজ ও ক্রেইগ ব্রাফেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাইজুল। ব্রাফেট ৪৩ ও হজ ৫৫ রান করে আউট হন।
তাদের বিদায়ের পর আর কেউ থিতু হতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ১৮৫ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। তাইজুলের সঙ্গে এই ইনিংসে বল হাতে দুরুন্ত ছিলেন তাসকিন ও হাসান মাহমুদ। তারা দুজনেই ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড
বাংলাদেশ ১৬৪/১০। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৬/১০ (৬৫ ওভারে, ব্রাথওয়েট ৩৯, কার্টি ৪০, নাহিদ রানা ৫/৬১, তাসকিন ২/১৯, হাসান মাহমুদ ১/২০, তাইজুল ১/২৪, মেহেদি ১/১৫)। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২৬৮ (৫৯.৫ ওভারে, সাদমান ৪৬, শাহাদাত ২৮, মেহেদি ৪২, লিটন ২৫, জাকের ৯১, তাইজুল ১৪, আলঝেরি ৩/৭৭, খেমার রোচ ৩/৩৬)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮৭/১০ (৫০ ওভারে, কেভেম হজ ৫৫, গ্রিভস ২০, তাইজুল ৫/৫০, হাসান ২/২০)। ফল: বাংলাদেশ ১০১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: তাইজুল ইসলাম। সিরিজসেরা: জয়ডেন সিলস। সিরিজের ফল: ১-১ ড্র।