কোপার পর বিশ্বকাপ, আবার কোপা। অসাধারণ এক কীর্তি গড়লো লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনা। একের পর এক শিরোপা জয়।
সোমবার (১৫ জুলাই) বদলি খেলোয়াড় লাউতারো মার্টিনেজের গোলে কলাম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপার শিরোপা ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা। অতিরিক্ত সময়ের ১১২ মিনিটে গোলটি করেন লাউতারো মার্টিনেজ।
এবারের কোপা জয়ের মধ্য দিয়ে অসাধারণ এক কীর্তি গড়েছে আর্জেন্টিনা। এ টুর্নামেন্টে সর্বাধিকবার শিরোপা জয়ের কীর্তি এখন মেসিদের। ষোলোবার কোপা জয় করেছে তারা। পেছনে ফেলে এতদিন মেসিদের সঙ্গে থাকা উরুগুয়েকে।
এখানেই শেষ নয়। দুটো মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের পাশাপাশি একই সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি এতদিন ছিল শুধু স্পেনের। এবার সে তালিকায় যোগ হলো মেসিরা। একটা বিচারে স্পেনের তুলনায় আর্জেন্টিনা এগিয়ে থাকছে। কেননা দুই কোপা ও বিশ্বকাপের পাশাপাশি আর্জেন্টিনার রয়েছে ফিনালিসিমা। ফলে টানা চার শিরোপা জয় করেছে মেসিরা।
ম্যাচের শুরুতেই তৈরি হয়েছিল জটিলতা। দর্শক বিশৃঙ্খলায় প্রায় ৭০ মিনিটে দেরিতে খেলা শুরু হয়। শুরুতেই কলম্বিয়ার আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। শুরু হয় শারীরিক নির্ভর খেলা। উভয় দল খেলার চেয়ে প্রতিপক্ষকে ফাউল করে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বেশি।
কলম্বিয়ার গায়িকা শাকিরা চমৎকার পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হয়। স্বল্প সময়ের জন্য ফ্রোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে যান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাক অ্যালিস্টার সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এমনকি কাছে থাকা খেলোয়াড়কে ঠিকমতো পাস দিতে পারেননি।
৫৪ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলটি যেখান থেকে তিনি হেড করেছিলেন সেখান থেকে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠানো কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটি করেন কলম্বিয়ার করদোবা। তার হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
৫৭ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় গোলের সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু তার শট কোনোমতে হাত লাগিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভারগাস।
বিরতির ঠিক আগ মুহুর্তে বিপদজনক জায়াগায় ফ্রি কিকের সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির ফ্রি কিক বিপদজনক হলেও তাগলিয়াফিকো তাকে গোলে রূপ দিতে পারেননি। তার হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনা অধিনায়ক ৬৬ মিনিটে মাঠ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। পুরানো ইনজুরি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় মাঠ ছেড়ে যান তিনি। এমন ঘটনায় মাঠের বাইরে বসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেসি।
৭৬ মিনিটে কলম্বিয়ার জালে বল ফেললেও গোল পায়নি আর্জেন্টিনা। নিকো গঞ্জালেসের গোল সমর্থকদের আনন্দে ভাসালে লাইন্সম্যানের পতাকা তাদের হতাশ করে।
শেষ দিকে আর্জেন্টিনা বেশ চাপ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। নিজের শেষ ম্যাচকে রাঙিয়ে নিতে একের পর এক আক্রমণ রচনা করেছে আর্জেন্টিনা।
১০৮ মিনিটে আর্জেন্টিনা দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করে। ডি মারিয়া চমৎকার এক ক্রস করেছিলেন। প্রয়োজন ছিল শুধু একটা মাথা বা পা ছোয়ানো। কিন্তু লাউতারো মার্টিনেজ ছুটে গিয়ে বলের নাগাল পাননি। এই ব্যর্থতার পরে তিনি ঠিকই পুষিয়ে দিয়েছেন। দারুণ এক গোল করে দলকে ইতিহাস রচনায় সহায়তা করেছে।