সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস (World Letter Writing Day)। দ্রুতগতির প্রযুক্তির যুগে যখন মানুষের যোগাযোগ নির্ভর করছে মুঠোফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, তখন অতীতের সেই আবেগমাখা চিঠির দিনগুলো যেন ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতির পাতায়। তবে সেই হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে আবারও স্মরণ করতেই প্রতিবছর পালিত হয় এই বিশেষ দিনটি।
চিঠি- কখনো যুদ্ধক্ষেত্রের সাহস জোগানো বার্তা, কখনো প্রেমের অনুভূতি, আবার কখনো প্রিয়জনের খোঁজ-খবরের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আজ থেকে এক যুগ আগেও ডাকপিয়নের জন্য অপেক্ষা করা ছিল অনেকের জীবনের এক মধুর অভিজ্ঞতা। প্রিয়জনের হাতের লেখা, অনুভূতি ভরা শব্দ- চিঠি ছিল কেবল বার্তা নয়, একখণ্ড আবেগও।
চিঠিকে ঘিরে লেখা হয়েছে অসংখ্য সাহিত্য, সৃষ্টি হয়েছে গান- যেমন জনপ্রিয় গানের লাইন: ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো।’ এক সময় এসব গান বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি ছিল।
1256
কিভাবে এলো এই দিবস
আন্তর্জাতিক চিঠি দিবসের সূচনা ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক রিচার্ড সিম্পকিনের হাত ধরে। নব্বই দশকের শেষ দিকে তিনি নিজ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্দেশে চিঠি লিখে পাঠাতেন। যদিও অনেক সময় তিনি কোনো উত্তর পেতেন না, কিন্তু যখন পেতেন, তখন তার আনন্দ ছিল অসীম। সেই আনন্দই তাকে অনুপ্রাণিত করত এগিয়ে যেতে।
চিঠির সেই হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্যকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই তিনি ১ সেপ্টেম্বরকে ‘বিশ্ব চিঠি দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর থেকেই প্রতি বছর এই দিনে মানুষকে চিঠি লেখায় উৎসাহিত করা হয়, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের হাতে কলমে চিঠি লেখার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
চিঠি২
চিঠি দিবসের গুরুত্ব
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল, লাইব্রেরি ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে এই দিনটিকে ঘিরে নানা আয়োজন হয়। চিঠি লেখা কর্মশালা, প্রতিযোগিতা, প্রদর্শনী ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে এই ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহ জাগিয়ে তোলা হয়।
যদিও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে হাতে লেখা চিঠির জায়গা দখল করে নিয়েছে ই-মেইল, মেসেজ বা হোয়াটসঅ্যাপ, তবুও চিঠির সেই মায়া আজও অনেকের হৃদয়ে রয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দিন নয়, বরং এটি আমাদের সেই অতীতকে স্মরণ করার এবং অনুভূতির গভীরতায় ফিরে যাওয়ার একটি অনন্য সুযোগ।