পাজল সমাধান করার উপকারিতা

পাজল সমাধান করা মস্তিষ্কের জন্য একটি চমৎকার ব্যায়াম যা মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়ায়। দেহকে সচল কর্মক্ষম রাখতে যেমন শরীরচর্চা করতে হয়, তেমনি মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে পাজল বা ধাঁধার সমাধান করা হলো মস্তিষ্কের ব্যায়াম। 

বিভিন্ন পাজল বা ধাঁধার সমাধানে মস্তিষ্ক কীভাবে উপকৃত হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

মস্তিষ্কের উভয় বলয়ের মধ্যে সুসমন্বয় ঘটায়: মানুষের মস্তিষ্কে দুটি বলয়। একটি ডান, অন্যটি বাম। মস্তিষ্কের বাম বলয় বিশ্লেষণী ও যৌক্তিক চিন্তা ভাবনা এবং ডান বলয় সৃজনশীলতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। পাজল  বা ধাঁধা সমাধানের সময় উভয় বলয় একসঙ্গে কাজ করে। এর মাধ্যমে দুই বলয়ের মাধ্যমে সমন্বয়ের অভ্যাস গড়ে ওঠে যা বাস্তব জীবনে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজে লাগে।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে: পাজল সমাধানের সময় আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোর মধ্যকার সংযোগ শক্তিশালী হয় এবং নতুন নতুন সংযোগ তৈরি হয়। এই নতুন নতুন সংযোগের ফলেই আমাদের মস্তিষ্ক অধিক কার্যক্ষম হয় এবং আমাদের স্মৃতি শক্তিশালী হয়।

মনকে প্রফুল্ল করে: পাজল সমাধান করলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের উৎপাদন বাড়ে। ডোপামিনকে বলা হয় সুখকর অনুভূতির হরমোন। এই হরমোন নিঃসরণের ফলে ব্যক্তির রাগ, ক্ষোভ, নেতিবাচকতা দূর হয়। তার পরিবর্তে মনে প্রবাহিত হয় আনন্দের ফল্গুধারা। পাজল সমাধানে তাই মন প্রফুল্ল হয়।

সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি করে: পাজল সমাধানের মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক মানসিক চাপ নেওয়ার প্রশিক্ষণ পায়। বাস্তব জীবনে যখন আমরা কোনো সমস্যায় পড়ি তখন এই প্রশিক্ষণ আমাদের ধীর-স্থির থেকে সমাধানের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে সাহায্য করে। ধাঁধা সমাধানের জন্য সমস্যাকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখতে হয়। বাস্তব জীবনের সমস্যাকেও নানা দিক থেকে পর্যালোচনা করার দক্ষতা পাজল সমাধান করার অভিজ্ঞতা থেকে পেতে পারি।

স্ট্রেস কমায়: পাজল সমাধান করলে ব্যক্তির মানসিক স্ট্রেস কমে। পাজল সমাধানের জন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগ। একে ধ্যানাবস্থাও বলা যায়। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে মানসিক চাপ নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে। অন্য কথায় বলা যায়, পাজল সমাধানের ফলে মানসিক স্ট্রেস কমে।