দক্ষিণ কোরিয়ার কাজের চাপে একটি রোবট আত্মহত্যা করেছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। অনেকে ধারণা করছেন দৈনিক নয় ঘণ্টা টানা কাজ এবং অফিসের মানব কর্মচারীদের চাইতে একে অনেক বেশি কাজ করতে হতো বলেই রোবট আত্মহত্যা করেছে! কিছুদিন আগে রোবটটিকে সরকারি অফিসের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার গুমি সিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, রোবটটি গত সপ্তাহে দৃশ্যত দুই মিটার উঁচু সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার পরে বিকল হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, দুর্ঘটনাটি ঘটার আগে ওই রোবট অফিসারকে এক জায়গায় ঘুরতে দেখা গেছে, যেন সেটি কিছু একটা খুঁজছিল। তবে সিঁড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার সঠিক কারণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে সিটি কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, রোবটের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হবে। রোবটটি স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনিক নথি সরবরাহ, শহরের প্রচার এবং তথ্য সরবরাহে সহায়তার কাজ করছিল।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ওই রোবট আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি হলের অংশ ছিল। এটি আমাদেরই একজন। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এই রোবট কাজ করে যাচ্ছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে এই ঘটনাকে ‘আপাত আত্মহত্যা’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তারা প্রশ্ন করেছে, ‘একজন পরিশ্রমী সিভিল অফিসার কেন এমনটি করলেন?’ রোবটিকে দেওয়া ‘কাজটি খুব কঠিন ছিল’ কিনা এ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
২০২৩ সালে আগস্টে রোবটটিকে নিয়োগ করা হয়। শহরে এমন কাজে নিয়োগ দেওয়া এটিই প্রথম রোবট।
এই রোবট তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক রোবট–ওয়েটার স্টার্টআপ বিয়ার রোবোটিকস। রোবটটি সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করত। এটির নিজস্ব সিভিল সার্ভিস অফিসার কার্ডও ছিল।
অন্যান্য রোবটের সাধারণত একটিমাত্র ফ্লোর ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু গুমি সিটি কাউন্সিলের রোবটটি লিফটের বোতাম চাপা থেকে শুরু করে সবগুলো ফ্লোরে যাতায়াত করতে পারত।
দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ রোবটের ব্যাপারে অত্যন্ত উৎসাহী। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রোবোটিকস অনুসারে, প্রতি ১০ জন কর্মচারীর জন্য একটি রোবট আছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। রোবটের ঘনত্বের দিক থেকে এ দেশি বিশ্বে শীর্ষে।
গুমি সিটি কাউন্সিল এএফপিকে জানিয়েছে, তারা একই ধরনের আরেকটি রোবট সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে।