চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে ৬ দেশের ৭ শতাংশ মানুষ

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে বদলে যাচ্ছে কাজের ধরন ও চাকরির বাজার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI) প্রযুক্তির আবির্ভাব একদিকে যেমন উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে এটি শ্রমবাজারে তৈরি করছে নতুন চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের প্রায় সাত শতাংশ চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে এআই প্রযুক্তির কারণে।

‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের ‘South Asia Development Update: Jobs, AI and Trade’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা এই ছয় দেশের শ্রমবাজারে এআইয়ের সরাসরি প্রভাব পড়বে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই দেশগুলোর মোট চাকরির প্রায় ৭ শতাংশ ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গ্রাস করতে পারে।

বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা করছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মোট ১৫ শতাংশ চাকরি হারাতে পারে এই প্রযুক্তির কারণে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক খাতের মাঝারি শিক্ষিত ও তরুণ কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে যারা হিসাবরক্ষণ (অ্যাকাউন্টস) ও গ্রাহক সেবা (কাস্টমার সার্ভিস) পেশায় যুক্ত, তাদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা তুলনামূলক বেশি। কারণ, এসব কাজ স্বয়ংক্রিয় করতে এআই এখন অত্যন্ত সক্ষম।

বিশ্বব্যাংক আরও জানিয়েছে, উচ্চ বেতনের দক্ষ পেশাজীবীরাও নিরাপদ নন। কিছু ক্ষেত্রে তাদেরও স্থান নিতে পারে উন্নত এআই মডেল। তবে তুলনামূলকভাবে নিম্ন আয়ের কর্মীরা কম ঝুঁকিতে রয়েছেন এবং অভিজ্ঞ কর্মীদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনাও কম।

এআই এখন আর শুধু তথ্য খোঁজা বা বিশ্লেষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বর্তমান প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রবন্ধ লেখা, কবিতা রচনা, গল্প তৈরি, এমনকি ছবি আঁকা ও সিনেমা বানানোর মতো সৃজনশীল কাজেও সক্ষম হয়ে উঠছে।

একসময় ধারণা ছিল, এআই কখনও সৃজনশীল কাজ করতে পারবে না, কিন্তু এখন সেই ধারণা বদলেছে। যদিও এখন এআই মূলত একটি নির্দিষ্ট ছক বা কাঠামো অনুযায়ী কাজ করে, তবুও প্রশ্ন উঠছে ভবিষ্যতে কি এআই আরও স্বাধীনভাবে চিন্তা করে সৃজনশীল কাজ করতে পারবে?