সিম নিষ্ক্রিয়করণ অভিযানে কমেছে ব্যবহারকারী

সিম যাচাই ও নিষ্ক্রিয়করণ অভিযান চলমান থাকায় টানা তৃতীয় মাস দেশে কমেছে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এনইআইআর চালুর প্রস্তুতির মধ্যে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক হারিয়েছে অপারেটরগুলো। 

বিটিআরসির তথ্যে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে মোবাইল গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ১৮.৭৯৭ কোটিতে, যা আগস্টের ১৮.৮৫৭ কোটি ও জুলাইয়ের ১৮.৮৮৭ কোটির চেয়ে কম। গড়ে প্রতি মাসে কমেছে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যবহারকারী। চার অপারেটরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক হারিয়েছে গ্রামীণফোন- এক মাসে ৬ লাখ ২০ হাজার। টানা তিন মাসে অপারেটরটির গ্রাহক কমেছে প্রায় ৮ লাখ। 

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিম পুনঃযাচাই অভিযান, বাজার প্রতিযোগিতা ও নিষ্ক্রিয় সিম বন্ধ হওয়াই ঘাটতির কারণ। বিপরীতে রবি আজিয়াটা সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ১০ হাজার নতুন গ্রাহক পেয়েছে। বাংলালিংক হারিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার, আর টেলিটক বেড়েছে ৩০ হাজার। এ বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট গ্রাহক বেড়েছে ১৩.৮ লাখ, তবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরেই কমেছে ৯ লাখ। তৃতীয় প্রান্তিকে বাজার আবার সংকুচিত হয়েছে। 

গ্রামীণফোন বলছে, নির্বাচনী মৌসুমে বাজারে অস্থায়ী গতি ফিরতে পারে। সেপ্টেম্বরে বাজার হিস্যায়ও গ্রামীণফোন শীর্ষে ৪৫.৭ শতাংশ। রবি ৩০.৬, বাংলালিংক ২০.২ ও টেলিটক ৩.৫ শতাংশ হিস্যা ধরে রেখেছে। 

এইদিকে ইন্টারনেট ব্যবহার আগস্টে ১৩.৫৩৩ কোটির বিপরীতে সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ১৩.৪১৬ কোটিতে। মোবাইল ইন্টারনেটই কমেছে সবচেয়ে বেশি, ব্রডব্যান্ড স্থির রয়েছে ১.৪৪৬ কোটিতে। বর্তমানে ১৮.৭৯৭ কোটি মোবাইল সংযোগের মধ্যে প্রায় ৭১ শতাংশই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। দেশের মোট ইন্টারনেট সংযোগের ৮৯ শতাংশই মোবাইল নির্ভর। ১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর চালুর পর অনিবন্ধিত ও অবৈধ হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বল্পমেয়াদে আরও গ্রাহক কমতে পারে। 

তবে খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে এটি সিম নিরাপত্তা, নেটওয়ার্ক সুরক্ষা ও তথ্যের নির্ভুলতা বাড়াবে। সংকোচন সত্ত্বেও ১৮ কোটির বেশি মোবাইল গ্রাহক ও ১৩ কোটির বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সংযুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ সারিতেই রয়েছে।