জোর করে কোনো দুর্বল ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করলেই সেই ব্যাংক সবল হয়ে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরাফে) আয়োজিত ‘কনভারসেশন উইথ ইআরএফ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক গভর্নর বলেন, একীভূত বিষয়টা নতুন না। এটি বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তবে এক ব্যাংকের সঙ্গে অন্য ব্যাংককে জোর করে একীভূত করে খারাপ ব্যাংককে ভালো করা যাবে না। একীভূত বা টেকওভার হতে পারে। তবে কোনো কিছুই জোর করা ঠিক হবে না।
অনুষ্ঠানে ইআরএফ সম্পাদক আবুল কাশেমের পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন, ইআরএফ নেতৃবৃন্দসহ গণমাধ্যম কর্মীরা।
ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ব্যাংক একীভূত নতুন কিছু না। তবে এটাতে জোর করা বা চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। যে দুটি ব্যাংক একীভূত হবে তাদের নিজেদের সম্মতি নেয়া জরুরি। সারা পৃথিবীতে এ পদ্ধতিতেই হয়। অতীতে বাংলাদেশেও হয়েছে। এটাতে জোর করে না চাপিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একীভূত করা উচিত।
তিনি বলেন, প্রায় দশ মাস ধরে আমাদের মূল্যস্ফীতি ১০ এর কাছাকাছি। মন্ত্রীরা বলছেন ৯.৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির পরও মানুষ ভালো আছেন। বাস্তবতা বিবর্জিত কথা। চাকরিজীবীদের হয়তো কিছুটা বেতন বেড়েছে। তার মানে এই মূল্যস্ফীতিতে তারা ভালো আছেন এটা বলা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের সব দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অথচ আমরা পারিনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মনিটরিং পদ্ধতি বদলাতে হবে। টিভিতে মনিটরিং না করে সরাসরি তদারকি বাড়াতে হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না।
ঋণ খেলাপি বিষয়ে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, কৃষককে ৫০০ বা হাজার টাকার ঋণের জন্য জেলে নেবো, আর যে ব্যক্তি দশ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরে উধাও হয়ে যায় তাকে সালাম দেবো, পাশে বসাবো- এটা হতে পারে না। ঋণ খেলাপিদের ডেকে পাশে বসিয়ে চা আপ্যায়ন করা হয়, এটি বেশি দিন চলতে পারে না। মনে রাখতে হবে ঋণ খেলাপি, কর খেলাপি, পাচারকারী একই সূত্রে গাঁথা। এই মুহূর্তে ব্যাংকে আমানত আসা দরকার। আমানতের বিমার হার এক কোটি টাকা করা দরকার। আমানত আসতে যতো বাধা সব দূর করতে হবে। তবেই ঘরের টাকা ব্যাংকে ফিরে আসবে।