৭০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি

সকাল থেকে টানা ভারী বৃষ্টি ও বর্ষা মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকার কারণ দেখিয়ে রাজধানীর কাঁচা বাজারে সবজির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ সবজি কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বিক্রেতাদের দাবি, ভোর থেকে যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক কম। সবজি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় বিক্রেতারা তেমন কাঁচামাল বাজারে আনেননি। ফলে খুচরা বাজারে এর একটা প্রভাব পড়বেই। এ ছাড়া শুক্রবারে (১২ জুলাই) বাজারে সব জিনিসের চাহিদা একটু বেশি থাকার কারণে সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় সবজির দাম একটু বেশি থাকে। তবে বেশির ভাগ সবজির দাম একই আছে বলে দাবি করছেন কোন কোন ব্যবসায়ী। দেশে বিভিন্ন এলাকায় বন্য দেখা দিয়েছে। ফসলের জমিও অনেক নষ্ট হয়েছে। তাই সবজির কিছুটা সংকট রয়েছে বলেও দাবি তাদের।

তবে বিক্রেতাদের এই যুক্তি মানতে নারাজ ক্রেতারা। তাদের দাবি, বাজারে কোনো কিছুর অভাব নেই। শুধুমাত্র বাজার মানিটরিংয়ের অভাবে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে শুক্রবার আসলেই ব্যবসায়ীরা ঈদ মনে করে। বাড়তি চাহিদার সাথে বাড়তি দাম দুই মিলে তাদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ জনগণ আমাদের বোবা কান্না দেখার কেউ নেই। পরিবারের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দিতে গিয়ে মূলধন ভেঙে খেতে হচ্ছে।

মরিরুজ্জামান নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, বাজারে খুব একটা যাওয়া হয় না। তবে বাবা গত কিছুদিন অসুস্থ থাকায় বাজার করতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারের যেই অবস্থা তাতে করে পাঁচ হাজার টাকার নিচে বাজারে আসলে মনে হয় ব্যাগ অর্ধেক খালি নিয়ে বাসায় যেতে হবে। দুই কেজি মাংস কিনলে ১৫০০ টাকা লাগে। চাল, ডাল, তেল পেঁয়াজ সব মিলিয়ে হিসেবে করলে দেখা যাবে এখনো অনেক কিছু কিনতে পারি নাই। অথচ বর্তমান সময়ে ১৫ হাজার টাকার চাকরি পেতে কত কষ্ট করতে হয়। যত ছোট পরিবার হোক না কেনো বাজারের যে অবস্থা তাতে ২০ হাজার টাকার নিচে কোন পরিবার তিন বেলা খেতে পারবে। গরিবের স্বস্তি কবে আসবে।

এদিকে আমদানি করেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কাঁচমরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা দরে। শুক্রবার রাজধানীর অধিকাংশ বাজারের চিত্র এটি।

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা। শসা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, কাঁকরোল ১০০ টাকা, গোল বেগুন ১২০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া পিস ৩০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। চলতি সপ্তাহেও কমেনি আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে।

তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের বাজার। মাছের বাজারেও কিছুটা উঠানামা করছে। সর্বনিম্ন ২০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া ও পাঙাশ। এ ছাড়া ৩০০ টাকার নিচে কোনো মাছ নেই।