খেলাপি ঋণে এগিয়ে উৎপাদনমুখী শিল্প

দেশের ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে খেলাপি ঋণ। যার প্রসার বেড়েছে উৎপাদনমুখী শিল্পের হাত ধরে। যা মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি। এ খাতের তৈরি পোশাক শিল্পের খেলাপির হার ১৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশই উৎপাদনমুখী শিল্পের। যার মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ হার নিয়ে শীর্ষে রয়েছে তৈরি পোশাক খাত। এর পরে রয়েছে টেক্সটাইল। তবে উৎপাদনমুখী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এ হার সাড়ে ৫ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর বিভিন্ন সমস্যায় উৎপাদন কমেছে কারখানাগুলোতে। তাতে ঋণখেলাপি হন অনেকে। রয়েছে ঋণ নিয়ে অর্থ পাচারের অভিযোগও।

বিগত কয়েক বছরে গ্যাস বিদ্যুৎসহ কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে পোশাক খাতের উৎপাদন কমেছে অর্ধেকের বেশি। ফলে, অনেক ব্যবসায়ীই এখন ঋণ খেলাপি। ঋণ নিয়ে তৈরি হয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগও।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, সব ফ্যাক্টরি, ইন্ডাস্ট্রি চলছে ৫৫ শতাংশ ক্যাপাসিটিতে। এ অবস্থায় ব্যাংক কেন ঋণ দিলো কোনো কারণে তাদের লোন বাড়ল এটা দেখতে হবে। পাচারের কারণে লোন বাড়ল নাকি ইন্ডাস্ট্রি চালাতে পারেনি এ কারণে লোন বেড়েছে এটা দেখতে হবে।

দেশের অর্থনীতির বিকাশে পোশাক খাতের সমস্যা চিহ্নিত করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। যেখানে দরকার আগামীর পরিকল্পনাও।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক কেএস মুর্শিদ বলেন, করোনা, তেলের দাম বৃদ্ধি, গ্যাস না থাকাসহ হাজার রকম সমস্যা আছে। এ ছাড়া আমরা যতটা না সচেতনতা দেখাই তার থেকে বেশি দেখাই এটাও হতে পারে। মূল কথা হচ্ছে এগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। কারণ পোশাক খাত খুব গুরুত্বপূর্ণ।

২০২৩ সালে খেলাপি ঋণ, ঋণ পুনঃতফশীল, পুনর্গঠন ও অবলোপনসহ দেশের ব্যাংক খাতের স্ট্রেসড অ্যাডভাস বা দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা।