বেড়েছে মাছ-মাংস-ডিমের দাম, সবজির বাজারও চড়া

রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বেড়েছে মাছ, মাংস ও ডিমের দাম। সবজির দামও রয়েছে আগের মতোই চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের ডজনপ্রতি দাম বেড়েছে ৫ টাকা।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম তুলনামূলক বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি। প্রতি ডজনে ৫ টাকা বেড়ে এখন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়। আর প্রতি ডজন সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা ও মুলা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, কচুর মুখী ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, আলু ২৫ টাকা ও শসা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ বর্তমানে কেজি প্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কমছে না বলে দাবি বিক্রেতাদের। কারওয়ান বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও চলতি মাসের প্রথম দিকে টানা বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় সবজি নষ্ট হয়েছে। ফলে পাইকারিতে দাম বেড়েছে, আমরাও বেশি দামে কিনে আনছি। তাই খুচরা বাজারে খুব একটা দাম কমানো যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।


এদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে নেই ইলিশ মাছ। তবে চাষের রুই ও কাতলার দাম স্থিতিশীল থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে টেংরা, পাবদাসহ অন্যান্য মাছ। বাজারে প্রতিকেজি বোয়াল ৮০০-১০০০ টাকা, কোরাল ৮৫০-৯০০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩০০-৪৫০ টাকা ও কাতল ৪৫০ টাকা, শিং মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, সিলভার কার্প-গ্রাস কার্প ২৮০ থেকে ৩৩০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই ও পাঙ্গাস ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, বাইন, বাইল মাছ ৭০০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির দাম ওঠানামা করলেও এখন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কক ও সোনালী মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। লাল লেয়ার কেজি প্রতি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।


এদিকে ব্যবসায়ীদের ঘোষিত নতুন দরের সয়াবিন বাজারে আসেনি। ভোজ্যতেল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯ টাকায়। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের জন্য গুনতে হচ্ছে ৯২২ টাকা।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত প্রোটিন না খেলে শরীরে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সসহ নানা উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয় এবং গর্ভবতী নারীদের জটিলতা বাড়ে।

জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউটের এক কর্মকর্তা জানান, দাম বাড়ার কারণে অনেক পরিবার সপ্তাহে এক-দু’দিনও মাংস খেতে পারছে না। এই প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে জাতির সার্বিক পুষ্টি অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।