বঙ্গোপসাগরে ভারতের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

বঙ্গোপসাগরে পারমাণবিক সক্ষমতার বড় প্রদর্শনী দেখাল ভারত। পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম একটি সাবমেরিন থেকে মধ্যপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বঙ্গোপসাগরে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাট থেকে কে-৪ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়। বিশাখাপত্তনম উপকূলের অদূরে এ পরীক্ষা পরিচালিত হয়।

প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সমুদ্রভিত্তিক পারমাণবিক সক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কে-৪ সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল (এসএলবিএম) ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এর মাধ্যমে স্থল, আকাশ ও সমুদ্র থেকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম হাতেগোনা কয়েকটি দেশের কাতারে যোগ দিলো ভারত।

স্থল থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য অগ্নি-৩ ক্ষেপণাস্ত্রের ভিত্তিতে নির্মিত কে-৪ বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ-পাল্লার সমুদ্রভিত্তিক কৌশলগত অস্ত্র। সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণের উপযোগী করে তুলতে ক্ষেপণাস্ত্রটির নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এর ফলে সাবমেরিনের লঞ্চ সাইলো থেকে বেরিয়ে পানির ভেতর দিয়ে ভেসে উঠে সমুদ্রপৃষ্ঠে আসবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। এরপর রকেট মোটর সক্রিয় করে আকাশে উৎক্ষেপণ হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আড়াই টন ওজনের পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। ভারতের আরিহান্ত শ্রেণির সাবমেরিনগুলো থেকে কে-৪ উৎক্ষেপণ করা  যাবে।

ভারতের পারমাণবিক ত্রিমুখী শক্তির (নিউক্লিয়ার ট্রায়াড) সবচেয়ে গোপন ও নির্ভরযোগ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। আরিহান্ত শ্রেণির ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিনগুলো দীর্ঘ সময় ধরে অজানা সমুদ্র অঞ্চলে সম্পূর্ণ নীরবে অবস্থান করে ‘ডেটারেন্স প্যাট্রোল’ পরিচালনা করতে সক্ষম।

কে-সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নামের ‘কে’ অক্ষরটি ভারতের প্রয়াত বিজ্ঞানী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাখা হয়েছে। ভারতের ইন্টিগ্রেটেড গাইডেড মিসাইল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে (আইজিএমডিপি) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন প্রবাদপ্রতিম এই পরমাণু বিজ্ঞানী।