ইসরায়েলি হামলা সত্ত্বেও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ টিকে থাকবে: খামেনি

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় কিছু শীর্ষ কমান্ডারকে হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। তবে এর মানে এই নয় যে, এটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জোর দিয়ে বলেন, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে হিজবুল্লাহ এখনও শক্তিশালী এবং ইসরায়েলি হামলা সত্ত্বেও এটি টিকে থাকবে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর)  সামরিক কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে এসব কথা বলেছেন তিনি। কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর জানিয়েছে।

শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ টানা তৃতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছিলেন, হিজবুল্লাহ কিছুটা দুর্বল হয়ে গেলেও এটি টিকে থাকবে।

খামেনির বক্তব্যে, ‘হিজবুল্লাহর কিছু কার্যকরী ও মূল্যবান বাহিনী শহীদ হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে গোষ্ঠীটির ক্ষতি করেছে। তবে এটি এমন কোনও ক্ষতি ছিল না যা গোষ্ঠীটিকে নতজানু করে ফেলতে পারে।’

ইরানের নেতা আরও বলেন, ‘হিজবুল্লাহর সাংগঠনিক শক্তি ও মানবসম্পদ অত্যন্ত শক্তিশালী এবং একজন সিনিয়র কমান্ডারকে হত্যার মাধ্যমে সেটিকে আঘাত করা যাবে না, যদিও গোষ্ঠীটির জন্য এটি স্পষ্টতই একটি ক্ষতি।’

‘ফিলিস্তিনি ও লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধোদের চূড়ান্ত বিজয় হবে’ ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন খামেনি।

অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তজুড়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বিনিময় করেছে হিজবুল্লাহ। তবে তাদের মধ্যকার সহিংসতা গত সপ্তাহে নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। তখন সমন্বিত হামলায় লেবানন ও সিরিয়াজুড়ে হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো বিস্ফোরিত হয়।

এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ। ওই হামলায় অন্তত ৩৯ জন নিহত এবং আরও প্রায় ৩ হাজার আহত হন। বিশ্লেষকরা এটিকে সাইবার যুদ্ধের একটি নতুন ও বিপজ্জনক মোড় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

বুধবার তৃতীয় দিনের মতো ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান লেবাননে বোমাবর্ষণ করেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিমান হামলায় অন্তত ৫৫৮ জন নিহত হয়েছে, যা ১৯৭৫-১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধের পর থেকে লেবাননে সবচেয়ে মারাত্মক সহিংসতার ঘটনা।

সম্প্রতি উভয়পক্ষের সহিংসতায় হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল ও ইব্রাহিম মুহাম্মাদ কুবাইসিসহ অনেক সিনিয়র ব্যক্তি নিহত হয়েছে।

প্রতিশোধ হিসেবে বুধবার তেল আবিবের কাছে ইসরায়েলের মোসাদ সদর দফতরে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলাকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছে।

দক্ষিণ লেবাননের শহর মারজায়ুন থেকে আল জাজিরার ইমরান খান জানিয়েছেন, ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ হামলা আরও তীব্র হতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে।

তিনি জানান, ‘কোনও ডি-এস্কেলেশন নেই। কূটনীতি নেই। শুধু হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একে অপরের ওপর হামলা করছে।’