ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার ওপর নির্ভর করছে খনিজসম্পদ চুক্তির সাফল্য: জেলেনস্কি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তির সাফল্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আসন্ন আলোচনার ওপর নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। চুক্তির খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনও সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই চুক্তি ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কিয়েভকে ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ে সহযোগিতা করবে। ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে চাইছেন, যা ইউক্রেনের জাতীয় স্বার্থের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কিয়েভ।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চুক্তির খসড়া বুধবারই অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।  যাতে উভয় পক্ষ এতে স্বাক্ষর করতে পারে। জেলেনস্কি শুক্রবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য যেতে পারেন।

জেলেনস্কি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই চুক্তি একটি বড় সাফল্য হতে পারে, অথবা এটি নীরবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হতে পারে। আর এই সাফল্য নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের আলোচনার ওপর।

তিনি বলেন, শুক্রবার চুক্তি সই করতে তার ওয়াশিংটন সফরের বিষয়ে উভয় পক্ষ এখনও কাজ করছে। গত সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে তিক্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে, যার মধ্যে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

জেলেনস্কি বলেছেন, শান্তি চুক্তি হওয়ার পর যেকোনও রুশ আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তা প্রদানই এই চুক্তির সাফল্য নির্ধারণ করবে। চুক্তির খসড়ায় সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চয়তার উল্লেখ নেই, তবে কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়ার প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে।

ট্রাম্প মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, জেলেনস্কি শুক্রবার ওয়াশিংটনে আসতে চান একটি বড় চুক্তি সই করতে। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা বলেছেন, এই চুক্তি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে এবং কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করবে।

চুক্তির শর্তানুযায়ী, ইউক্রেনের সরকারি খনিজ সম্পদ, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য আহরণযোগ্য সম্পদের ভবিষ্যৎ আয়ের ৫০ শতাংশ একটি পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিলে জমা হবে। এই তহবিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ মালিকানায় ও পরিচালনায় থাকবে।

জেলেনস্কি বলেছেন, তহবিল গঠনের জন্য একটি পৃথক চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও বিনিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, চুক্তিতে ইউক্রেনের ঋণগ্রস্ত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী দেনিস শমিহাল বলেছেন, ইউক্রেন কখনই রাষ্ট্রের স্বার্থ বিবেচনায় না করে কোনও ঔপনিবেশিক চুক্তি বিবেচনা বা সই করবে না।

এই চুক্তি ইউক্রেনের বিশাল খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার খুলে দিতে পারে। তবে ইউক্রেনের অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে এই চুক্তি দেশটির স্বার্থের পরিপন্থি হতে পারে। জেলেনস্কি ও শমিহালের বক্তব্য ইউক্রেনীয়দের আশঙ্কা কিছুটা প্রশমিত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।