‘সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াতে পারে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া’

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের মধ্যে সীমান্তে আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই সেনাবাহিনী। তারা বলছে, হামলায় কম্বোডিয়ার বাহিনী ভারী অস্ত্রের পাশাপাশি রকেটও ব্যবহার করেছে।

জানা যায়, দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে থাইল্যান্ডে ১৫ জন এবং কম্বোডিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন দুই দেশকে বিভক্তকারী সীমান্তের উভয় পাশে বসবাসকারী ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ। সংঘাত শুরু হওয়ার পর, ২৫ জুলাই থাইল্যান্ডের বুড়িরাম প্রদেশে একটি রাস্তা ধরে চলতে দেখা যায় সেনাবাহিনীর যানবাহন। 

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শুক্রবারও প্রাণঘাতী লড়াই অব্যাহত রয়েছে, যেখানে উভয় দেশ ভারী কামান এবং রকেট হামলা চালিয়েছে, যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সামরিক সংঘর্ষ।

শুক্রবার থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই সাংবাদিকদের বলেন, সামরিক সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে, যা যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। সংঘর্ষে এরইমধ্যে ভারী অস্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
 
থাই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কৌশলগত পরিস্থিতি অনুযায়ী গুলি চালিয়ে থাই বাহিনী যথাযথ জবাব দিয়েছে।’
 
থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) থাইল্যান্ডে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৪ জন বেসামরিক নাগরিক ও একজন সৈন্য নিহত হয়েছেন। আর কম্বোডিয়ার ওডার মিঞ্চে সীমান্ত প্রদেশের একজন স্থানীয় প্রাদেশিক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, থাই হামলায় সেখানে একজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। 

এছাড়া কম্বোডিয়ার প্রিয়াহ ভিহিয়ার প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, থাইল্যান্ডের সাথে দেশটির উত্তর সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
 
কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার ভোরের আগে থাইল্যান্ড থেকেও গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

নম পেন পোস্টের তথ্যানুসারে, কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও চারুকলা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে যে থাইল্যান্ডের হামলায় ইউনেস্কো-তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান প্রিয়াহ ভিহিয়ার মন্দিরের ‘যথেষ্ট ক্ষতি’ হয়েছে।

 
এদিকে, সীমান্ত সংঘাত নিয়ে আলোচনা করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার একটি জরুরি বৈঠক করবে বলে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
 
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড কৃর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কম্বোডিয়ায় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে, যখন কম্বোডিয়ান বাহিনী থাই সীমান্তের কাছে বেসামরিক এলাকাগুলোতে দূরপাল্লার রকেট নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী।
 
সীমান্তের একটি বিতর্কিত এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হওয়ার জন্য উভয় দেশ একে অপরকে দোষারোপ করেছে এবং এই সংঘাত দ্রুত ছোট অস্ত্রের গুলি থেকে ভারী গোলাবর্ষণে পরিণত হয়। তবে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে থাইল্যান্ডের দীর্ঘদিনের ‘চুক্তিবদ্ধ’ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। আর কম্বোডিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন বলেছে, তারা চলমান সংঘাত নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।