পাকিস্তানের ছয়টি বিমান ভূপাতিত করার দাবি ভারতের 

গত মে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সশস্ত্র উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি বড় সামরিক বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ভারত।  শনিবার (০৯ আগস্ট) বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান দেশটির বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কয়েক মাস পর এই প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে এত বড়সড় দাবি করলো দেশটি। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

সিং জানান, পাকিস্তানের বিমানগুলোকে গুঁড়িয়ে দিতে তারা মূলত রাশিয়া থেকে কেনা দূরপাল্লার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে। তার ভাষায়, ‘আমাদের হাতে ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পাওয়া নির্ভরযোগ্য তথ্য আছে, যা প্রমাণ করে অন্তত ছয়টি বিমান ধ্বংস হয়েছে।’

এই ইলেকট্রনিক ডেটার মাধ্যমে কোনো উড়োজাহাজের গতি, অবস্থান ও গতিপথ শনাক্ত করা যায়। তার ভাষ্যমতে, ধ্বংস হওয়া বিমানগুলোর মধ্যে একটি নজরদারি বিমান ছিল, যেটিকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে নিশানা করা হয়।

সিং আরও বলেন, ‘ভূমি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বিমান ভূপাতিত করার ক্ষেত্রে এটি আমাদের জন্য রেকর্ডসৃষ্টি।’ 

যদিও পাকিস্তানের ভূপাতিত বিমানগুলোর ধরন নির্দিষ্ট করে জানাননি এয়ার চিফ মার্শাল, তবে তিনি দাবি করেন- পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত দুটি ঘাঁটির এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও হামলার শিকার হয়েছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বহরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের তৈরি বিভিন্ন মডেলের বিমান রয়েছে। যার মধ্যে এফ-১৬ অন্যতম।

এই সামরিক উত্তেজনার সূত্রপাত হয় চলতি বছর এপ্রিলে, যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। ওই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত ও আকাশপথে চারদিন ধরে তীব্র লড়াই চলে। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংঘাত বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।

অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করে—ওই সংঘাতে তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে একটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি রাফাল। প্রথমে ভারত তা অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে কিছু বিমান ক্ষতির কথা স্বীকার করে। তবে তারা ছয়টি বিমান হারানোর দাবি বারবার অস্বীকার করেছে।

ফ্রান্সের বিমানবাহিনী প্রধান জেনারেল জেরোম বেল্লাঞ্জার এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, তিনি ভারতের অন্তত তিনটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের প্রমাণ পেয়েছেন। যার একটি ছিল রাফাল মডেলের। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।