ভারতের কলকাতায় ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাংলায় কথা বলায় তাদের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত মধ্য কলকাতার শিয়ালদহ অঞ্চলে স্টেশনের পার্শ্ববর্তী প্রধান সেতুর কাছে। বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বন্ধুদের নিয়ে মুঠোফোনের সরঞ্জাম কিনতে সেখানকার একটি দোকানে যান। দোকানগুলো অবাঙালিদের। এ সময় দাম নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। বিক্রেতারা ছাত্রদের ‘বাংলাদেশি ও বাঙালি’ বলে অপমান করেন। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন। আহত ব্যক্তিদের কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছাত্রদের অভিযোগ, তারা বাংলায় কথা বলছিলেন বলে তাদের ওপর হামলা হয়। দোকানিরা কথা বলছিলেন হিন্দিতে। তারা বাংলায় কথা বলতে অস্বীকার করেন।
এ খবর পেয়ে গতকাল মধ্যরাতে বাংলা জাতীয়তাবাদী সংগঠন বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক বর্গ চট্টোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিলে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
হামলার ঘটনায় ছাত্ররা মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মুঠোফোনের সরঞ্জাম বিক্রেতা দীপক কুমার সাউ ও ইমতিয়াজ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কয়েক মাস ধরে ভারতে বাঙালিদের ওপর কখনো সংগঠিত, কখনো অসংগঠিতভাবে হামলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এখনো তাঁদের হেনস্তা করা হচ্ছে, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের। বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনও মনে করছে। তবে এখন পর্যন্ত কলকাতায় বাঙালিদের ওপর হামলার তেমন খবর জানা যায়নি।
কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছাত্রদের বক্তব্য নথিভুক্ত করে বিষয়টির তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তবে কলকাতায় গতকাল রাতের ঘটনার পর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কাও করছে রাজ্য প্রশাসন।