যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের মনোনীত প্রার্থী জোহরান কোয়ামে মামদানি ঘোষণা করেছেন, তিনি জয় পেলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেবেন।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহু যদি নিউইয়র্ক শহরে ঢোকেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। ‘এটি আমার এমন প্রতিশ্রুতি, যেটি আমি বাস্তবায়ন করতে চাই’।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মামদানি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি না দিলেও ‘ওই লোকটির’ বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে আমি সম্মান জানাই। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নেতানিয়াহু বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
মামদানি বলেন, ‘আমি চাই এই শহর আন্তর্জাতিক আইন রক্ষার জন্য দাঁড়াক।’
তবে এমন পদক্ষেপ নিলে ব্যাপক চাপে পড়তে পারেন এই ডেমোক্রেট নেতা। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহৎ আবাসস্থল হলো নিউইয়র্ক। ফলে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করলে তিনি ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে পারেন।
এর আগে তিনি ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’ স্লোগানকে নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি এ ধরনের স্লোগান ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার কথাও বলেছিলেন। আবার আইনগতভাবেও নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা কার্যত অসম্ভব হতে পারে।
শহর বা অঙ্গরাজ্যের আইন ভঙ্গ না হলে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব নয়। তাছাড়া তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় কূটনৈতিক অনাক্রম্যতাও (ইমিউনিটি) ভোগ করেন।
তবুও আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে জনমত জরিপে এগিয়ে থাকা মামদানি দাবি করেছেন, রাজ্য ও স্থানীয় ডেমোক্র্যাটদের সেই পদক্ষেপ নিতে হবে যা ফেডারেল সরকার নিতে পারছে না। এ মুহূর্তে নেতৃত্বের জন্য আমরা ফেডারেল সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না। এখন শহর ও রাজ্যগুলোকেই দেখাতে হবে নিজেদের মূল্যবোধ ও জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো আসলে কেমন।
তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন ক্যালিফোর্নিয়ার বর্তমান গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে, যিনি ২০০৪ সালে সানফ্রান্সিসকোর মেয়র থাকা অবস্থায় ফেডারেল আইন অমান্য করে সমলিঙ্গ দম্পতিদের বিয়ের লাইসেন্স প্রদান করেছিলেন। মামদানি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধেও তিনি একই পদক্ষেপ নিতে চান, যাকে ২০২৩ সালে আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
এদিকে জুলাই মাসে হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে নেতানিয়াহু মামদানির হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে বলেন, বিশ্বে যথেষ্ট পাগলামিই চলছে, এসবের শেষ নেই। এটা অনেকটা হাস্যকর, কারণ বিষয়টা একেবারেই গুরুতর নয়। আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নিউইয়র্কে আসব, তারপর দেখা যাবে।
এ সময় ট্রাম্প মামদানিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তার আচরণ ঠিক রাখা ভালো, না হলে বড় সমস্যায় পড়বে।