মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও এরিকা কার্কের ‘ঘনিষ্ঠ’ আলিঙ্গন ভাইরাল

টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ (টিপিইউএসএ) ইভেন্টে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং প্রয়াত চার্লি কার্কের বিধবা এরিকার আবেগপূর্ণ আলিঙ্গন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।

গত ২৯শে অক্টোবর (বুধবার) ইউনিভার্সিটি অফ মিসিসিপিতে অনুষ্ঠিত টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর এক ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স । তবে ইভেন্টটির মূল আলোচনা থেকে বেশি চর্চিত হচ্ছে তার পরিচিতি পর্বের একটি মুহূর্ত—প্রয়াত সিইও চার্লি কার্কের বিধবা এরিকা কার্কের সঙ্গে তার উষ্ণ আলিঙ্গন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর টিপিইউএসএ ইভেন্টের সময় চার্লি কার্কের হত্যার পর তার স্ত্রী এরিকা এখন সংস্থাটির সিইওর দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবারের ইভেন্টটি শুরু হয় এরিকার আবেগপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে দিনটি তার স্বামী নিহত হওয়ার সাত সপ্তাহ পূর্ণ হলো।

৩৬ বছর বয়সী এরিকা বলেন, তার ‘প্রিয় বন্ধু, জেডি ভ্যান্সকে’ কথা বলার জন্য আহ্বান করার আগে তিনি প্রার্থনা করেছিলেন। তিনি প্রয়াত স্বামীর কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিলেন, যিনি তাকে বলেছিলেন, ‘যাও, সেই অঞ্চল পুনরুদ্ধার করো, সোনা। যাও। যুদ্ধ ইতিমধ্যেই জেতা। ঈশ্বরের ভালোবাসা জয় করে নেয়।’

এরপর ভাইস প্রেসিডেন্টকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানোর আগে এরিকা ভ্যান্সের প্রতি তার মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, ‘কেউ কোনোদিন আমার স্বামীর স্থান নিতে পারবে না। কিন্তু আমি জেডি ভ্যান্সের মধ্যে আমার স্বামীর কিছু সাদৃশ্য দেখতে পাই। সত্যি পাই। এবং সেই কারণেই আমি তাকে আজ রাতে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’

ভ্যান্স (৪১) মঞ্চে এলে এরিকা তার সাথে একটি নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হন। আলিঙ্গনের সময় ভাইস প্রেসিডেন্টকে এরিকার কোমরে হাত রাখতে দেখা যায়, এবং এরিকা তার আঙ্গুলগুলি ভ্যান্সের চুলের মধ্যে  বুলিয়ে দেন, এতে ভ্যান্সের চুল সামান্য এলোমেলো হয়ে যায়।

এই 'ঘনিষ্ঠ' সম্ভাষণটি মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনদের অনেকে তাদের হাতের অবস্থান বিশ্লেষণ করে প্রশ্ন তোলেন, এই ধরনের একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে এমন আলিঙ্গন কতটা 'উপযুক্ত' ছিল।

ওই ইভেন্টে ভ্যান্সের স্ত্রী, ঊষা চিলুকুরি ভ্যান্সও উপস্থিত ছিলেন। আলিঙ্গন বিতর্ক ছাড়াও, ভ্যান্স তার ও স্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে করা মন্তব্যের জন্যেও আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিবাহিত এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। হিন্দু হিসেবে বেড়ে ওঠা স্ত্রী ঊষা এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া ভ্যান্স কীভাবে তাদের সন্তানদের আন্তঃধর্মীয় পরিবারে বড় করে তুলছেন—এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে, তারা সন্তানদের খ্রিস্টান হিসেবে বড় করছেন।

একইসাথে, ভ্যান্স আশা প্রকাশ করেন যে তার স্ত্রীও ভবিষ্যতে তার ধর্মে দীক্ষিত হবেন। 

এসময় তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ রোববার, ঊষা আমার সাথে চার্চে যায়। আমি কি আশা করি যে, অবশেষে, তিনি সেই একই জিনিস দ্বারা অনুপ্রাণিত হবেন যা আমাকে চার্চে এনেছিল? হ্যাঁ, সত্যি বলতে, আমি তা আশা করি, কারণ আমি খ্রিস্টান গসপেলে বিশ্বাস করি এবং আমি আশা করি অবশেষে আমার স্ত্রীও এটিকে একই ভাবে দেখতে পাবেন।’

ভ্যান্সের এই মন্তব্যের কারণে আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক এবং ধর্মীয় প্রত্যাশা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।