লেবাননের সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে আরব বিশ্বের দেশগুলোর জোট আরব লীগ। ইসরায়েল ও লেবানন যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যে শনিবার (২৯ জুন) জোটটির সহকারী মহাসচিব ও মিসরীয় কূটনীতিক হোসাম জাকি এ ঘোষণা দেন। তবে এ ঘোষণায় এখনও নীরব রয়েছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। খবর আনাদোলু।
হোসাম জাকি বলেন, হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ওপর থেকে সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরব লীগ। কারণ, এই গোষ্ঠীটি বর্তমান রাজনীতি ও লেবাননের ভবিষ্যতের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আরব বিশ্বের দেশগুলো নিয়ে গঠিত আরব লীগ। বৈরুত সফরের একদিন পর টেলিভিশনে এক ভাষণে জোটের সেক্রেটারি জেনারেল হোসসাম জাকি বলেন, হিজবুল্লাহ এখন থেকে আর সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। লীগের আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এ সিদ্ধান্তের কারণেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।
জাকি আরও বলেন, ‘আরব লীগের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিজবুল্লাহর ওপর ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’র এ তকমা আর প্রযোজ্য হবে না।’জোটের সদস্য রাষ্ট্র ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলেও জানান হোসসাম জাকি।
লেবাননের সংবাদপত্র আল আখবার জানায়, শুক্রবার (২৮ জুন) বৈরুত সফরে যান জাকি। সেখানে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত লয়ালটি ও রেজিস্ট্যান্স ব্লকের প্রধান মুহাম্মদ রাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
এর মধ্যদিয়ে এক দশকেরও বেশি সময়ের পর আরব লীগ ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যোগাযোগ হলো। সবশেষ ২০১৬ সালে হিজবুল্লাহর নেতা রাদ ও আরব লীগ সহকারী মহাসচিব জাকির বৈঠক হয়।
ওই বছরই সৌদি আরবের উদ্যোগে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা দেয় আরব লীগ। সে সময় মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি ইরাক, ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া ও আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করা হয়েছিল। ইসরায়েলের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের ফলে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, হিজবুল্লাহ যেভাবে ইসরায়েল ও গাজায় গণহত্যা বন্ধে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছে তা আরব দেশগুলোর জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ বিষয়টিই হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য জোটকে উদ্বুদ্ধ করেছে।