ইসলামী শরিয়াহ আইন প্রচলিত সৌদি আরবে, এ কথা সবারই জানা। ১৯৫২ সাল থেকে মদ নিষিদ্ধ সৌদি আরবে। সৌদি নাগরিক তো বটেই, বিদেশি নাগরিকদের জন্যও মদ পান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল দেশটিতে। ইসলামী বিধিবিধান অনুযায়ী বেশ কিছু ব্যাপারে কঠোর সব আইন আছে দেশটিতে, যা অমান্য করলে নেমে আসতে পারে কঠিন শাস্তি।
৭৩ বছরের পুরোনো সেরকমই এক আইন এবার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। ২০২৬ সাল থেকে নির্দিষ্ট লাইসেন্সের আওতায় মদ বিক্রি এবং পান করার অনুমতি দিতে যাচ্ছে দেশটি।
মূলত, রিয়াদ এক্সপো ২০৩০ এবং ফিফা বিশ্বকাপ ২০৩৪—এর প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই সৌদি আরব সরকার এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
তবে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে রিয়াদে একটি দোকানকে অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়।
এবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার আওতায় সৌদি আরবের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে এবং বিশ্বব্যাপী পর্যটন ও বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা অনেকাংশে তুলে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সৌদি মোমেন্টেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বিধিনিষেধের আওতায় দেশজুড়ে প্রায় ৬০০ নির্দিষ্ট স্থানে মদ বিক্রি ও পান করার অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এসব স্থানের মধ্যে থাকছে পাঁচতারকা হোটেল, বিলাসবহুল রিসোর্ট, কূটনৈতিক অঞ্চল, এবং সৌদি আরবের অন্যতম মেগা পর্যটন প্রকল্প যেমন নিওম, সিন্দালা দ্বীপ ও রেড সি প্রজেক্ট।
নতুন নিয়মে এসব অনুমোদিত স্থানে বিয়ার, ওয়াইন ও সাইডারের মতো কম অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পরিবেশন করা যাবে। তবে ২০ শতাংশের বেশি অ্যালকোহলযুক্ত স্পিরিট জাতীয় পানীয় নিষিদ্ধই থাকবে।
এছাড়া, সৌদি আরবে মদ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পর্যটন এলাকা এবং প্রবাসীকেন্দ্রিক অঞ্চলেই পাওয়া যাবে। পাবলিক প্লেস, ব্যক্তিগত বাসস্থান ও সাধারণ দোকানে মদের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। সব ধরনের বিক্রি ও সেবন হবে নিয়ন্ত্রিত ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত পরিবেশে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা এসব স্থান পরিচালনা করবেন এবং সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বজায় রাখবেন।