ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাসহ ৬০ জনের রাষ্ট্রীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় রাজধানী তেহরানে এ আয়োজন করা হয়।
রাষ্ট্রীয়ভাবে করা এ জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ। শোকাহত জনতা কালো পোশাকে, হাতে জাতীয় পতাকা ও নিহতদের ছবি ধরে শোক মিছিল করছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও আট বাসিন্দাসহ ৬০ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে ইরানে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) প্রধান, ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের প্রধান ও শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা।
তবে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে রাষ্ট্রীয় জানাজায় দেখা যায়নি। তিনি যুদ্ধ শুরুর পর প্রকাশ্যে আসেননি। অতীতে এমন বহু রাষ্ট্রীয় জানাজায় খামেনি অংশ নিয়েছিলেন। নিহতদের কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া পড়েছিলেন।
তেহরানের কেন্দ্রস্থলে আজাদি স্ট্রিটে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনগুলোর ওপর নিহত কমান্ডারদের ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি সাঁটানো ছিল। রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি ও ব্যালিস্টিক মিসাইল বিভাগের প্রধান জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ যুদ্ধের প্রথম দিনেই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। ইসরায়েলের দাবি ছিল, ওই দিন তারা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করতে আক্রমণ শুরু করে। এছাড়া রেভল্যুশনারি গার্ডের মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি এবং শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচিও নিহত হন ইসরায়েলি হামলায়।
শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে চার নারী ও চার শিশুর জানাজাও পড়েন তেহরানের বাসিন্দারা। যুদ্ধবিরতির পর এটিই ছিল নিহত শীর্ষ কমান্ডারদের প্রথম রাষ্ট্রীয় জানাজা। জানাজায় অংশ নিতে সরকারি কর্মীদের জন্য অফিস ছুটি ঘোষণা করা হয়।
গত ১৩ জুন শুরু হয় ইরান-ইসরায়েল সংঘাত, যা চলেছিল ১২ দিন। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র অভিযানে একাধিক ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। গত মঙ্গলবার একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটে। যুদ্ধ শেষে ইরান ও ইসরায়েল উভয়েই নিজেদের বিজয়ী বলে দাবি করে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে তাচ্ছিল্য করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘটনাগুলো ‘অস্বাভাবিকভাবে অতিরঞ্জিত’ করেছেন। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে তারা কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবি তিনিও প্রত্যাখ্যান করেন।