নাইজেরিয়ায় মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় জনাকীর্ণ একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো প্রদেশে মাগরিবের নামাজের সময় হওয়া এই হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র নাহুম দাসো। এ ঘটনায় আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। 

কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। খবর বিবিসি

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বর্নোর রাজধানী মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেট এলাকার একটি মসজিদে সন্ধ্যায় নামাজের সময় ঘটনাটি ঘটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে বিস্ফোরণের পরের দৃশ্য উঠে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে— মার্কেট এলাকায় ধুলা উড়ছে, মানুষজন আতঙ্কে ছুটোছুটি করছে। এ হামলার দায় এখনও কোনও পক্ষ স্বীকার করেনি। তবে এর আগেও এ অঞ্চলে মসজিদ ও জনাকীর্ণ স্থানে আত্মঘাতী হামলা এবং আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী।

মাইদুগুরি দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম ও তাদের সহযোগী আইএস পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশের তৎপরতার কেন্দ্রে রয়েছে। বর্নোতে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বোকো হারামের সশস্ত্র অভিযান শুরু হয় ২০০৯ সালে। বছরের পর বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সহিংস হামলা ঘটে।

অন্যদিকে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো বলেন, মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেট এলাকার ওই মসজিদে বিস্ফোরণের পরপরই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে শুরুতে সরকারিভাবে হতাহতের কোনও সংখ্যা জানানো হয়নি।

মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুনা ইউসুফ এএফপিকে জানান, অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বাবাকুরা কলো নামে এক মিলিশিয়া নেতা বলেন, নিহতের সংখ্যা সাত। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসা ইউশাউ জানান, তিনি বহু আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখেছেন।

বিস্ফোরণের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যে শহরে এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি প্রায় দুই দশক ধরে বোকো হারাম ও আইএস–সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহিংসতার কেন্দ্রে ছিল। জাতিসংঘের হিসেবে, ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই সংঘাতে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। সহিংসতা কমলেও তা ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও।

এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় আবারও সহিংসতা বাড়ার আভাসে সম্প্রতি উদ্বেগ বাড়ছে। দীর্ঘ সামরিক অভিযানের পরও এসব গোষ্ঠী প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সক্ষমতা ধরে রেখেছে।

একসময় প্রতিদিন রাতেই যেখানে গোলাগুলি ও বোমা হামলার খবর পাওয়া যেত, সেই মাইদুগুরি শহর গত কয়েক বছরে তুলনামূলক শান্ত ছিল। ২০২১ সালের পর থেকে এটাই সেখানে সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে ধরা হচ্ছে।