পরিবেশকর্মীদের বিক্ষোভের অনুমতি দিল আজারবাইজান

আজারবাইজানের বাকুতে গত ১১ নভেম্বর থেকে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯) চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান পরিণতি মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলো কতটা সমর্থন পাবে, তা নিয়ে জাতিসংঘের এ বছরের জলবায়ু সম্মেলনে আগের চেয়েও বেশি আলোচনা চলছে।

এদিকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ‘স্বৈরাচারী, অত্যাচারী ও নিপীড়ক’ বলে বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনে আসতে চাননি সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। 

তিনি এ কথাও বলেছিলেন, আজারবাইজানকে এই সম্মেলনের আয়োজন করতে দেওয়াই ঠিক হয়নি।

গ্রেটা থুনবার্গের ওই ভূমিকায় বেজায় চটেছিলেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট। তাতে ভ্রুক্ষেপ না করে থুনবার্গ জর্জিয়া থেকে চলে গেছেন আর্মেনিয়া, যে দেশের সঙ্গে আজারবাইজানের সাপে–নেউলে সম্পর্ক।

আলিয়েভকে যে যে বিশেষণে থুনবার্গ ভূষিত করেছেন, তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ খুব একটা যে নেই, সেই প্রমাণ পাওয়া গেল আজ শুক্রবার। কেননা, সম্মেলনের পঞ্চম দিনে পরিবেশ আন্দোলনকর্মীদের বিক্ষোভ দেখানোর অনুমতি তিনি দিয়েছেন। এতদিন ধরে গণ্ডা গণ্ডা সংগঠন বিক্ষোভ কর্মসূচির অনুমতি পেতে মাথা কুটে মরলেও প্রেসিডেন্ট ছিলেন অনড়।

বিক্ষোভকারীরা সেই অনুমতি পেলেন তখন, যখন আগত বিশ্বনেতারা ভাষণ পেশ করে আজারবাইজান ছেড়ে ফিরে গেছেন যে যাঁর দেশে। দূষণ রোধে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে দর–কষাকষি চালাচ্ছেন পরিবেশের জন্য নিবেদিত মানুষ। প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে কত অর্থ পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়ার কোনো ইতিবাচক লক্ষণ এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, ২২ নভেম্বরের পরও হয়তো আরও দু–এক দিন এই দর–কষাকষি চলবে। এই অবসরে বিক্ষোভকারীদের একটু সুযোগ দেওয়া তাঁর ভাবমূর্তির কারণে জরুরি বলে হয়তো মনে করেছেন প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ। নইলে তাঁর ‘না’ কে ‘হ্যাঁ’ করানোর সাধ্য কারও নেই।

সেই অবসরে বিভিন্ন সংগঠন তাদের মতো করে বাকু অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বিক্ষোভ দেখাল। নাম অলিম্পিক স্টেডিয়াম হলেও বাকুতে কোনো দিন অলিম্পিক গেমস হয়নি, অদূর ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এই স্টেডিয়াম চত্বরের ধারেকাছে এত দিন ভিড়তে দেওয়া হয়নি কোনো পরিবেশকর্মীকে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ কসাইখানা বন্ধ করে দেওয়া ও মিথেন গ্যাস উৎপাদনকারী বলে গরু–মোষ খাওয়া নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা লেখা ব্যানার নিয়ে কাছাকাছি রাস্তা বা মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন। পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু আজ শুক্রবার সরকারিভাবে অনুমতি মেলায় বহুবর্ণে সজ্জিত পরিবেশকর্মীরা ব্যানার, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে সম্মেলনের মূল জায়গায় নেচেগেয়ে বিক্ষোভ দেখালেন। কেউবা নিয়ে এসেছিলেন কাগজের তৈরি প্রকাণ্ড সাপ, প্রকৃতিকে রক্ষা করা কেন দরকার তা বোঝাতে। কেউ কেউ বড় বড় পোস্টার সাজিয়ে নীরবে বসে থেকেছেন। সেই সব পোস্টারে জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষতিকর প্রভাবের কাহিনি বিধৃত।