তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শোকাতুর শুধু বাংলাদেশ নয়, সীমানা ছাড়িয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতেও। যে শহরে ১৯৪৫ সালে অবিভক্ত ভারতে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং জীবনের প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন, সেখানকার মানুষ আজ তাঁর স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে ৪৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জলপাইগুড়ির নয়াবস্তি এলাকায় খালেদা জিয়ার শিশুকাল কেটেছে। তাঁর বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার সেখানে 'দাস অ্যান্ড কোং' নামে একটি চা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। খালেদা জিয়া সেখানকার যোগমায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত এবং পরে সুনিতিবালা সদর গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৫০ সালে তাঁর পরিবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসে।
জলপাইগুড়ির প্রবীণ বাসিন্দা এবং ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা জানান, খালেদা জিয়ার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত নয়াবস্তির সেই বাড়িটি আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমান মালিকরা জানান, বেগম জিয়ার আত্মীয়রা প্রায়ই বাড়িটি দেখতে আসতেন।
বেগম জিয়ার শৈশবের খেলার সাথী সিয়ন মন্ডলের স্মৃতিচারণ করে স্থানীয়রা জানান, খালেদা জিয়া যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন জলপাইগুড়ির মানুষ উৎসবে মেতেছিল। আজ তাঁর চিরবিদায়ের খবরে সেখানকার প্রবীণরা চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না। সুনিতিবালা সদর গার্লস হাইস্কুলের বর্তমান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্কুল খুললে তাঁদের প্রাক্তণ এই শিক্ষার্থীর স্মরণে বিশেষ শোক সভার আয়োজন করা হবে।
রাজনৈতিক পরিচয় ছাপিয়ে জলপাইগুড়ির মানুষের কাছে খালেদা জিয়া ছিলেন তাঁদের শহরের মেয়ে। তাঁর মৃত্যুতে দুই বাংলার সাধারণ মানুষের মধ্যে এক গভীর শূন্যতা ও সংহতির চিত্র ফুটে উঠেছে।