বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েনেসংকটের মুখে পড়েছেন কলকাতার ব্যবসায়ীরা, এতে হাজার হাজার মানুষ জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় পড়েছেন। এমনই সতর্ক বার্তা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন। খবর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া’র।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে অথবা সম্পত্তি বন্ধক রেখে কলকাতার কেন্দ্রে ব্যবসা করছেন।
ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দু’দেশের মধ্যে চলা সম্পর্কের সংকটে অনেক ব্যবসায়ী স্থায়ীভাবে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।
দৃশ্যত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। ভারতে পর্যটন ও চিকিৎসা খাতে প্রতি মাসে হাজার হাজার বাংলাদেশি ভ্রমণ করলেও সরকারের পটপরিবর্তনের পর দেশটি এসব ভিসা দেয়া বন্ধ রেখেছে।
কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে ফ্লাইট চলাচল কমে গেছে। পাশাপাশি বাস অপারেটররাও তাদের পরিষেবার সীমিত রেখেছে।
এ পরিস্থিতিতে কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, মার্কুইস স্ট্রিট ও সদর স্ট্রিটসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ৫ হাজার হোটেল ও গেস্টহাউস রয়েছে। এখন এসব হোটেল-গেস্টহাউসে পর্যটকের হার ৫ শতাংশেরও কম বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকরা।
চৌরঙ্গি লেনের একটি গেস্টহাউসের মালিক ব্যবসায়ীদের বৈঠকে বলেন, ৩০ লাখ রুপি দিয়ে তিনি ওই সম্পত্তিটি ইজারা নিয়েছেন। মাসে ভাড়া দিতে হয় ১.১৭ লাখ রুপি। কিন্তু বাংলাদেশি পর্যটক না আসায় তিনি দেউলিয়া হতে বসেছেন।
তারমতো পথে বসার দশা আরো অনেক হোটেল ও গেস্ট হাউজ ব্যবসায়ীর।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী খান জানান, অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যারা স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখেছেন, বা জমি বিক্রি করেছেন, অথবা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ছোট গেস্টহাউস ইজারা নিয়েছেন, যেখানে কক্ষ রয়েছে মাত্র তিন বা চারটি। তারা আর এই ক্রমবর্ধমান ক্ষতির বোঝা টানতে পারছেন না।
হোটেল মালিক, মুদ্রা বিনিময়কারী, ট্রাভেল অপারেটর, রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ও অন্যান্য ব্যবসায়ী মিলিয়ে এই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসংখ্যা দেড়শ’র বেশি।
মার্কুইস স্ট্রিট ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটিও আরেক বৈঠক থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আগের মতো সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার জাতীয় কমিটির সদস্য অনিল পাঞ্জাবি জানান, তিনি ওই বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তের উভয় পাশেই ব্যবসা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’