চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত নিশ্চিত করতে সরকার ১০.৫০ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ চাল দেশে আনার পরিকল্পনা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে বেসরকারিভাবে অন্তত ২ লাখ টন এবং জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে আরও ৩ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে চাল আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়া, ভারত থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় বাজারে চালের দাম বাড়ছেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমন মৌসুম শুরু হলেও, চালের দাম কমেনি, উপরন্তু সরকারি খাদ্য মজুতও কমে আসছে। সমস্যা মোকাবিলায় সরকার আমদানি শুল্ক ও কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করলেও চালের বাজারে অস্থিরতা কমেনি। মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, ব্যবসায়ীরা আমদানিতে আগ্রহ না দেখানোর ফলেই সৃষ্টি হয়েছে এমন অবস্থা।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) খাদ্য ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান জানান, বেসরকারি খাতে চাল আমদানির জন্য ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে ১০.৫২ লাখ টন চাল আমদানির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ৯ হাজার ৫০০ টন চালের জন্য এলসি খোলা হয়েছে এবং এর বেশিরভাগ চাল এরই মধ্যে দেশে পৌঁছেছে।
কর্মকর্তারা জানান, ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৬২ শতাংশ আমদানি শুল্ক মওকুফের সুপারিশ করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে চাল আমদানির সব শুল্ক প্রত্যাহার করে। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় বেসরকারি খাতে চাল আমদানির জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে। এখন এই মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) জানিয়েছে, গত এক বছরে স্বর্ণা ও চায়না জাতীয় মোটা চালের দাম ৪.৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব চালের দাম ছিল কেজি প্রতি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।
এছাড়া, পাইজামের দাম ১৪.৮১ শতাংশ বেড়েছে। বুধবার ঢাকার বাজারে এই চালের দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৯ থেকে ৬৫ টাকা। নাজিরশাইলের মতো উন্নতমানের চালের দামও বেড়েছে ৮.০৩ শতাংশ।
