বান্দরবানের লামায় ১৭ ত্রিপুরা পরিবারের বাড়িঘর পোড়ানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সংগঠনটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মানবাধিকার কর্মী জাকির হোসেন এবং অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী এ ঘটনার গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানান।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, তংগাঝিরি পাড়া গ্রামে ১৯ ত্রিপুরা পরিবারের বাস। উক্ত গ্রামবাসীরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এবং নিজেদের গ্রামে গির্জা না থাকায় বড়দিনের আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যান। সেই সুযোগে বড় দিনের দিনই একদল দুবৃত্ত দিবাগত রাত ১ টার দিকে অগ্নিসংযোগ করে বাড়িগুলো পুড়িয়ে দেয়। এতে ১৯ পরিবারের মধ্যে ১৭ পরিবারের ঘর-বাড়ি পুড়ে গিয়ে এখন সর্বশান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুই যুগ্ম সমন্বয়কারী উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি বিগত চার-পাঁচ বছর আগে একদল লোক নিজেদের ‘এসপির লোক’ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক পাড়াটি উচ্ছেদ করে বাগান করে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর দখলদাররাও পাড়া ছেড়ে চলে যান এবং ১৯ পরিবার ত্রিপুরা পুনরায় পাড়ায় এসে ঘর তৈরী করে বসবাস করতে শুরু করে। ওই পাড়াটি পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।’
এ বিষয়ে তারা আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার অন্যতম হল- ভূমি সমস্যা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পার্বত্য চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এভাবে হরহামেশাই আদিবাসীদের ভ‚মি দখল করে নিয়ে লুঠতরাজ চালিয়ে আসছে নানা দুর্বৃত্ত বাহিনী। ফলে নানাভাবে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছেন আদিবাসীরা। পাহাড়ের আদিবাসীদের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি ও এ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অনতিবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
দুই যুগ্ম সমন্বয়কারী এ ঘটনায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ত্রিপুরা আদিবাসীদের যথাযথ ও দ্রুত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং গ্রামবাসীর মনে ভয় ও শঙ্কা দূর করার জন্য এলাকায় দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি। এছাড়া ওই ঘটনায় যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
