বছরের অন্য সময়ের তুলনায় পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহ বেশি বেশি ইবাদত করে থাকেন। কেননা, রমজান মাসে গুনাহ মাফের জন্য উত্তম। এ সময়ের ইবাদতে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা অধিক সন্তুষ্ট হন। বরকতময় এই মাসে আল্লাহ তায়ালা নেক আমলের সওয়াব বৃদ্ধি করে দেন। তাই রমজান মাসে সমস্ত ইবাদত বেশি পরিমাণে করা উচিত। তারমধ্যে একটি দান করা। রমজান মাসে বেশি বেশি দান করতে কোরআনেও উৎসাহিত করা হয়েছে।
মহানবী হযযত মুহাম্মদ (সা.) সব সময় দান করতেন। তবে রমজান মাসে দানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতেন। রমজানে রাসূলের (সা.) দান সম্পর্কে হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। রমজানে তার দানশীলতা (অন্য সময় থেকে) অধিকতর বৃদ্ধি পেত; যখন জিবরাঈল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। জিবরাঈল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে আগমন করতেন এবং তারা পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) তখন কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়ে অধিক দানশীল ছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ০৬; মুসলিম, হাদিস : ২৩০৮; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬১৬)।
কোরআনের নির্দেশনা
কোরআনে এমন অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহর রাস্তায় দান করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। দুনিয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মানুষকে আখিরাতমুখী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব আয়াত তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রাস্তায় দান-সদকার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। রমজান মাসে রাসূল সা. বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করতেন। কোরআনের এসব আয়াত তিলাওয়াতের মাধ্যমে রাসূল সা. আল্লাহর রাস্তায় বেশি বেশি দানের প্রতি উদ্বুদ্ধ হতেন এবং তুলনামূলক রমজান মাসে বেশি দান করতেন।
জিবরাঈল আ.-এর সংস্পর্শ
রমজানের প্রতি রাতে জিবরাঈল আ.-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হতো মহানবী সা.-এর। এই সাক্ষাৎ ছিল সৎ ব্যক্তির সঙ্গে উঠাবসার মতো। আর সৎ ব্যক্তির সঙ্গে উঠাবসা আল্লাহর প্রতি ঈমান বৃদ্ধি করে এবং আনুগত্যের প্রতি আগ্রহী করে তোলে। এই সাক্ষাতের সংস্পর্শও রাসূল সা.-কে বেশি বেশি দান-সদকা করতে উদ্বুদ্ধ করতো।
রমজানের সংস্পর্শ
রমজানের সংস্পর্শের কারণে তিনি এই মাসে বেশি বেশি দান দান করতেন। কারণ, এই বরকতময় মাস নেক আমলের সওয়াব বৃদ্ধি করে, মান-মর্যাদা উন্নীত করে, বান্দাকে আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী করে নেক আমলের মাধ্যমে।
