ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়ার ক্ষতি

আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম

ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নতে মুয়াক্কাদার গুরুত্বও অনেক। সুন্নতে মুয়াক্কাদা এমন নামাজ, যা নবিজী (স.) নিয়মিত আদায় করতেন এবং বিনা ওজরে কখনও ত্যাগ করতেন না। সুন্নতে মুয়াক্কাদা ত্যাগ এটি একটি আত্মিক ক্ষতি, যার ফলে একজন মুসলিম অনেক বড় পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। আসুন জেনে নিই, সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দিলে কী কী পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়ার ক্ষতি
সুন্নতে মুয়াক্কাদা ত্যাগ করলে একজন মুসলিম যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন, সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
১. জান্নাতের ঘর থেকে বঞ্চিত হওয়া: রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ পড়বে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানাবেন।’ (সহিহ মুসলিম: ৭২৮)। এই ১২ রাকাত হলো- ফজরের আগে ২ রাকাত, জোহরের আগে ৪ রাকাত ও পরে ২ রাকাত, মাগরিবের পরে ২ রাকাত এবং এশার পরে ২ রাকাত। এই সুন্নত নামাজ ছেড়ে দিলে জান্নাতের এমন অমূল্য পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২. জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুযোগ হারানো: এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জোহরের আগে ৪ রাকাত এবং পরে ৪ রাকাত সুন্নত পড়বে, আল্লাহ তার দেহকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৬৭৬৪)। এই সুন্নত নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেন। সুন্নত নামাজ ছেড়ে দিলে এই সুরক্ষা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা হয়।

৩. রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নত থেকে দূরে থাকা: সুন্নতে মুয়াক্কাদা নিয়মিত আদায় করা ছিল রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নাহ। এটি ত্যাগ করা মানে তাঁর আদর্শ থেকে সরে যাওয়া। যখন একজন মুসলিম সুন্নত নামাজ ত্যাগ করে, তখন সে রাসুলের পথের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ে, যা আধ্যাত্মিকভাবে এক বড় ক্ষতি।

৪. আত্মিক শক্তি হ্রাস: সুন্নত নামাজ আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। এটি একজন মুমিনের ঈমানকে পূর্ণতা দেয়। সুন্নত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আত্মিক শান্তি আসে এবং আল্লাহর রহমত ও দয়া লাভ করা যায়। সুন্নত নামাজ ছেড়ে দিলে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

যেসব কারণে মানুষ সুন্নত নামাজ ছেড়ে দেয়
অজ্ঞতা: অনেকেই এই নামাজের গুরুত্ব ও এর সুফল সম্পর্কে জানেন না।
অলসতা: সময়ের অভাব বা অলসতার কারণে অনেকে সুন্নত নামাজে অবহেলা করেন।
গুরুত্বের অবমূল্যায়ন: অনেকে ফরজ নামাজের তুলনায় সুন্নতে মুয়াক্কাদাকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, যা একটি ভুল ধারণা।

করণীয়
জ্ঞান অর্জন: সুন্নতে মুয়াক্কাদার গুরুত্ব সম্পর্কে কোরআন ও হাদিস থেকে জ্ঞান অর্জন করুন।
নিয়মিত অভ্যাস: ধীরে ধীরে সুন্নত নামাজ আদায়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রথমে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দিয়ে শুরু করে, এরপর বাকিগুলো আদায়ের চেষ্টা করুন।
অনুপ্রেরণা: মনে রাখুন, প্রতিটি রাকাতের বিনিময়ে জান্নাতের ঘর এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পাওয়ার মতো মহৎ পুরস্কার অপেক্ষা করছে।

MMS
আরও পড়ুন