ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালাইজেশন জরুরি: পার্বত্য উপদেষ্টা

আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ পিএম

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, বিশ্বের বহু দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে মাস্টার প্ল্যান রয়েছে, যেখানে ভূমির ব্যবহার, মালিকানা ও পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে নির্ধারিত থাকে। আমাদের দেশেও ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালাইজেশন জরুরি, বিশেষ করে ভূমির জোনিং ম্যাপ প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। 

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প’ এর আওতায় আয়োজিত পার্বত্য জেলাসমূহের ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ সমস্যা সকলকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। এখানে ল্যান্ড হোল্ডিং অনেকাংশে কমিউনিটি ভিত্তিক, যা থেকে বেরিয়ে এসে জমির সত্ত্ব ও অংশ ডিজিটালভাবে নিশ্চিত করতে হবে। শুধু ইশারা দিয়ে জমি পরিমাপের দিন শেষ—এখন প্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতিই একমাত্র সমাধান।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় একটি জমি একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি হয়। হেডম্যান ও কার্বারীদের কাছে প্রতারণা বন্ধের কোনো কার্যকর কৌশল নেই। ফলে পার্বত্য অঞ্চলে দারিদ্র্যতার অন্যতম কারণ ভূমি জটিলতা। তাই পরিবেশবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। ভূমি খাতে দুর্নীতি রোধ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কর্মশালায় সুপ্রদীপ চাকমা আসন্ন দুর্গাপূজা ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান উৎসব নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।

কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি ব্যবস্থাপনা সহজীকরণ সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এ সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বেশি নাগরিক হয়রানির শিকার হয়। প্রধান উপদেষ্টার লক্ষ্য হচ্ছে হয়রানিমুক্ত ভূমি ব্যবস্থা, আর মন্ত্রণালয় সে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে।

সভায় পার্বত্য জেলার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনার নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

কর্মশালা শেষে বিকেলে একই স্থানে তিন পার্বত্য জেলার সার্কেল চীফ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, হেডম্যান ও কার্বারীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভূমি উন্নয়ন কর পুনঃনির্ধারণ, রেকর্ড রুমের তথ্য স্ক্যানিং করে সংরক্ষণ ও হেডম্যানদের সাথে সমন্বয়, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, বাজার ফান্ড সংক্রান্ত বিষয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে নিষ্পত্তি এবং রাঙ্গামাটি এসি ল্যান্ড অফিস ভবন নির্মাণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা, অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল হক চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক, হেডম্যান-কার্বারী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

MMS
আরও পড়ুন