ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিতর্ক থামেনি। সম্প্রতি নীলক্ষেতে ব্যালট পেপার ছাপানো নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, এই প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম হয়নি এবং ফলাফলে কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয়লাভ করে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট'। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণা হলেও পরবর্তীতে নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানোর বিষয়টি সামনে এলে বিতর্ক তৈরি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুরুতে দাবি করেছিল, নীলক্ষেতের কোনো দোকানে ব্যালট ছাপা সম্ভব নয়। কিন্তু ছাপার তথ্য স্পষ্ট হলে বিতর্ক তীব্র হয়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এমআরএন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানোর বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ব্যালট ছাপানোর প্রক্রিয়ায় পাঁচটি গোপন ধাপ ও সিকিউরিটি কোড থাকায় জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভোটারদের স্বাক্ষর ও কাস্টিং ভোটের মধ্যে কোনো অমিল পাওয়া যায়নি। মোট ৩৯ হাজার ৮৭৪ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন, যা প্রায় ৭৫ শতাংশ। নির্বাচন কমিশন বলছে, নীলক্ষেতে প্রাথমিক ছাপা হলেও তদন্তে কোনো অনিয়মের প্রমাণ মেলেনি। তবু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে এবং রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা ব্যাখ্যা দেবে।
এদিকে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘সাদা দল’ নির্বাচনে জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফল স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। যদিও অধিকাংশ রিটার্নিং অফিসার, যারা নিজেরাও সাদা দলের শিক্ষক, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম দেখেননি বলে জানিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরা, সাংবাদিক ও এজেন্টদের উপস্থিতিতে নির্বাচন পরিচালনার কথা উল্লেখ করে তারা নির্বাচনকে স্বচ্ছ বলে অভিহিত করেছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) সাদা দলের বিবৃতিকে দ্বিমুখী আচরণ আখ্যা দিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যখন অধিকাংশ দায়িত্বে সাদা দলের শিক্ষকরাই ছিলেন, তখন অনিয়মের অভিযোগ তাদের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এদিকে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদল, বাগছাসসহ বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচন মেনে নিলেও নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপা ও অন্যান্য অসংগতির স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশনের উচিত এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সন্দেহের অবসান ঘটানো।
ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েমও একই মত প্রকাশ করে বলেন, প্রার্থীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে কমিশনের ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।
আজ নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যার পর বিতর্ক কতটা প্রশমিত হবে, সে দিকেই এখন নজর সবার।
দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সজাগ থাকার আহ্বান জানালেন ডাকসু ভিপি
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন নির্দেশনা
থাইল্যান্ডে ফুল ফান্ডেড মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ