সাভারে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) সাবেক শিক্ষার্থী ২৫ বছর বয়সী তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় এবার প্রধান অভিযুক্ত সোহেল রোজারিও সহ আরও এক আসামি বিপ্লব রোজারিকে ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে র্যাব ও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
সোমবার বিকেলে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব- ৪ কমান্ডার স্কোয়ার্ড লিডার নাজমুল হাসান বলেন, ‘বিকেল ৩টার সময় উত্তরা দিয়া বাড়ি থেকে বিপ্লব রোজারিওকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে র্যাব-৪ নবীনগর ক্যাম্পে আনা হয়েছে। রাতেই থানায় হস্তান্তর করা হবে।’
এর আগে গত রোববার ওই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার মিঠুন বিশ্বাসকে আদালতে পাঠানো হলে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুল ওহাব।
নব্য ফ্যাসিবাদীদের প্রতিহত করতে জাতি অতীতের মতোই প্রস্তুতআজ সোমবার ভোর রাতে গাজীপুর কালিগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ মামলার দ্বিতীয় ও প্রধান আসামি সোহেল রোজারিওকে (৩৭) গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। সে সাভার কমলাপুর গোয়ালিও এলাকার বাসিন্দা।
বিকেলে র্যাব-৪ মামলার শেষ ও তৃতীয় আসামি বিপ্লব রোজারিওকে উত্তরার দিয়া বাড়ির একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করে। এর আগে তার অন্যতম সহযোগী মিঠু বিশ্বাসকে (৪৪) গ্রেফতার করে গত রোববার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মিঠু বিশ্বাসের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন
এর আগে আজ সোমবার সকালে আসামি সোহেল রোজারিওকে (৩৭) গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জালাল উদ্দিন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত সোহেল রোজারিওসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নং-১৯ দায়ের করেন। এরপর সাভার ও মিরপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও এনসিপি সহ এলাকাবাসী আসামিদর গ্রেফতারে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী সাভারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ানো শেষে বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় গিয়ে দেখেন, তার মা বাসায় তালা দিয়ে পাশের এক চা-দোকানির কাছে চাবি রেখে গেছেন। পরে চা-দোকানির কাছ থেকে চাবি নিয়ে ফেরার পথে সোহেল রোজারিও মদ্যপ অবস্থায় তরুণীকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন।
কিছু দূর যাওয়ার পর সোহেলের সঙ্গে মিঠু বিশ্বাস ও বিপ্লব রোজারিও এর দেখা হয়। এরপর তারা তিনজন মিলে ওই শিক্ষার্থীকে অনুসরণ করতে থাকেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সোহেল রোজারিও তরুণীকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। পরে অপর দুই আসামির সহযোগিতায় সেখানে তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এ বিষয়ে কাউকে জানালে ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে প্রধান অভিযুক্তসহ অন্য দুই আসামি পলাতক ছিলেন। জেলা পুলিশের সার্বিক নির্দেশনায় ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ ও সাভার থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত সোহেল রোজারিওকে গাজীপুরের কালিগঞ্জ এলাকা থেকে এবং সহযোগী মিঠু বিশ্বাসকে রাজধানীর তেজগাঁও তেঁজকুনিপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ মামলার শেষ আসামি বিপ্লব রোজারিওকে সাভার র্যাব-৪ গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে মিঠু বিশ্বাসের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
