মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে আগে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বেশি সুযোগ পেত। তবে আগামীতে অভিন্ন নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মায়ানমারের রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচিত হবে। এজন্য ১০টি নির্ধারিত শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবরণীতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বৈধ লাইসেন্সধারী সব এজেন্টকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমতা ও সামঞ্জস্য বজায় রাখার অনুরোধ জানানো হচ্ছিল। এ বিষয়ে গত ২১-২২ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৩য় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনার পর মালয়েশিয়া সরকার সবার জন্য সমান সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে নতুন ‘রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ পাঠানো হয়েছে।
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া বা মানদণ্ডগুলো:
১. লাইসেন্স প্রাপ্তির পর ন্যূনতম ৫ বছর সন্তোষজনক কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২. বিগত ৫ বছরে বিদেশে ন্যূনপক্ষে ৩,০০০ কর্মী প্রেরণের প্রমাণক থাকতে হবে।
৩. বিগত ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ৩টি ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্য দেশে কর্মী প্রেরণ ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ণ, নিয়োগ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে।
৫. কর্মী প্রেরণকারী দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে সদাচরণের সনদ (Certificate of Good Conduct) থাকতে হবে।
৬. এজেন্সির বিরুদ্ধে জবরদস্তিমূলকভাবে শ্রমে নিয়োগ, মানব পাচার, শ্রম আইন লঙ্ঘন, জোরপূর্বক অর্থ আদায় (extortion), অর্থপাচার বা অন্য কোনো আর্থিক অপরাধ এবং অনৈতিক অভিবাসন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড থাকা যাবে না।
৭. সামগ্রিক সুবিধাদিসহ রিক্রুটিং এজেন্সির নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে- যেখানে আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ দিকনির্দেশনা মডিউল (Induction module) থাকতে হবে।
৮. এজেন্সির অনুকূলে পৃথক পৃথক ৫ জন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত সন্তোষজনকভাবে অভিবাসন কার্যক্রম সম্পাদানের প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।
৯. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই কমপক্ষে ৩ বছর যাবৎ পরিচালিত ন্যূনপক্ষে ১০,০০০ বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট একটি স্থায়ী অফিস থাকবে, যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মতো অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে।
১০. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই ইতঃপূর্বে বিদেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে গন্তব্য দেশের (মালয়েশিয়াসহ) নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্তাবলি আইনসম্মত ও পদ্ধতিগতভাবে অনুসরণ করার প্রমাণক থাকতে হবে।
যোগ্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য ৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওপরের সব শর্ত পূরণকারী বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কোনো ব্যত্যয় ছাড়াই মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করবে।
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর বন্ধুত্ব উদযাপনে এসবিএসে রঙিন আয়োজন
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক হত্যা, স্থানীয় নাগরিকসহ আটক ৬